লিখেছেন : শামীমা বেগম

ইচ্ছে করে ঘুনে ধরা অসুস্থ সমাজটাকে একাই বদলে দেই।একা কি সমাজ বদলানো যায়? না যায়না। চরম সত্যি এটাই যে একা সমাজকে পাল্টানো আদৌ সম্ভব নয়। এজন্য দরকার সবার একাত্মতা, একনিষ্ঠতা। আমি মনে করি সমাজকে বদলে দেয়ার প্রথম ও প্রধান উপায় হচ্ছে মন মানসিকতার পরিবর্তন। আপনি যদি রাতে চিন্তা করেন সকালে ঘুম থেকে উঠে কারো বাসায় চুরি – ডাকাতি করতে যাবেন, অবৈধপথে টাকা উপার্জন করবেন। দুর্নীতি করবেন। তবেই গোটা সমাজ অন্ধকারময় অসুস্থ। আর যদি রাতে চিন্তা করেন প্রাতঃরাশে উঠে প্রথমেই নামাজ কায়েম করবেন তারপর কোরআন তিলাওয়াত করবেন এরপর কিছু হাদিস পাঠ করবেন এবং পরিবারের সবাই কে শুনাবেন। অসহায়দের পাশে দাড়াবেন। নিরন্নের মুখে অন্ন তুলে দেবেন। বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান করবেন। নিয়ত করে ঘর থেকে বেরুবেন যে সারাদিন যেন ভালো কিছু করতে পারেন। দেখবেন আপনাকে অনুসরণ করে আপনার পুরো পরিবার আপনার মতই ইসলামের বিধান মেনে ভালো কাজ গুলোই করবে। একবার ভাবুন আপনি যদি আপনার পরিবারকে আদর্শ করে গড়ে তুলেন। অন্য পরিবার গুলোও তখন আপনাকে অনুসরণ করবে। কারণ ভালোটা সবাই গ্রহণ করার চেষ্টা করে সহজে কেউ খারাপ পথে ইচ্ছে করে যেতে চায়না। যদি অন্যরাও আপনার মত আদর্শ পরিবার গড়ে তুলতে পারে। তবে এভাবেই গড়ে উঠবে একটা আদর্শ সমাজ আমরা জানি কয়েকটি পরিবার একত্রে বসবাস করাকেই সমাজ বলে।
জানি ঘুনে ধরা অসুস্থ সমাজকে বদলে দেয়া অতটা সহজ নয়। তবুও চলুন দেখিনা চেষ্টা করে আপনার আমার সম্মিলিত চেষ্টায় আপনার আমার চারপাশটা বদলে দেয়া যায় কি না। যে সমাজে থাকবেনা কোনো হিংসে,মারামারি, হানাহানি,দাঙ্গা। থাকবেনা কোনোই অপশক্তি, দুর্নীতি। থাকবেনা সমাজে কোনোই বিভাজন। পথে – ঘাটে – ট্রামে – বাসে বা কোনো লোকালয়ে কোনো মা-বোন হবেনা কো ধর্ষিত। যেখানে অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ। গড়ে তোলো আন্দোলন দুর্বার।
দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার,সময় এবার করো সবের প্রতিকার। ভেঙ্গে অপশক্তির বিষদাঁত,গুড়িয়ে দুর্নীতির সকল অপকৌশল আমরা গড়বো সুন্দর শান্তিময় একটি সমাজ। গরিবের রক্ত চোষে গড়ছো যারা সম্পদের পাহাড়। অবৈধ কালো টাকায় গড়ে তুলছো বড় বড় রাজপ্রাসাদ,অট্টালিকা। এতো সম্পদ নয়,ঝড়ে পড়া কুহেলিকা। ক্ষণস্থায়ী,নশ্বর জীবন তোমার। চোখ বন্ধ করো এক সেকেন্ড ভাবো তুমি আসলে কে? কোথা থেকে এসেছো? কোথায় যাবে চলে? ভাবো আরো গভীরে ভাবো “দম” – এই দমটা একবার ত্যাগ করলে আবার গ্রহণ করতে পারবে এই নিশ্চয়তা কি আছে তোমার? নিঃশ্বাসের বিশ্বাস নেই এক সেকেন্ডের। তবে কেন এত মিথ্যে অহমিকা? কেন এত দাম্ভিকতা?কেন গড়ছো সম্পদের পাহাড়? কেনইবা গড়ছো রাজপ্রাসাদ? হন্যে হয়ে ছুটছো টাকার পিছু অথচ মৃত্যুও ছাড়ছেনা তোমার পিছু। মৃত্যু সদা তাড়া করছে তোমায়। তবে কার জন্য করছো এসব?
যার জন্য করছো সে কি কাঁধে নেবে তোমার পাপের দায়ভার? না কখনো নেবেনা। তবে শোষিত না হয়ে যতটুকু আছে হালাল তোমার তা থেকে দান করো বঞ্চিতদের।
পাশে দাড়াও অসহায়ের।
উন্মোচিত করো মানবতার।
উন্নত করো মন-মানসিকতার।
সুখী জনের সাথে হও সুখী।
দুঃখীর সাথে দুঃখী।
তুলে দাও নিজের খাবার অনাহারীর মুখে।
দেখবে কত শান্তি এই ভবে।
পাপ করলে পাপের দহন
সারাজীবন করবে বিবেককে দংশন।
এসো বিবেক জাগ্রত করি,সর্বদা ভালো কাজ করি।অন্যায়ের পথ ছাড়ি,ন্যায়ের পথ ধরি
বদলে দেই ঘুনে ধরা অসুস্থ সমাজকে
মানবিকতার উর্ধ্বে থেকে,করি যত আয়োজন
তবেই মিলবে যত শান্তি, মিলবে আল্লাহর সন্তুষ্টি
পাবে মহান আল্লাহর সেরা উপঢৌকন।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*