পাপ
সবচেয়ে উজ্জ্বল যে তারা সেও একদিন ঝরে পড়ে
আপন আকাশ হতে।
ঝরে গেলে ,মরে গেলে আকাশও মানুষের মতই – খবর রাখে না !
রোদ-মেঘ-বৃষ্টি কোন না কোনভাবে
ধুয়ে মুছে দেয় ইতিহাসগুলি ,
আকাশের কলঙ্ক লুকোতে সুন্দর
চাঁদও ইচ্ছায় অনিচ্ছায় হয় বলি ।
অথচ ঐ মৃত চাঁদের আলোতেই ক্ষুধার্ত শিশুটি ডাস্টবিন খুজে পায় ।
মানব খাদ্য যোগ কিছুই সে পায় না কোনদিন,
তবু তার পেট ভরে ।
কিন্ত মন ভরে না ।
মন ভরার তাগিদ এলে ক্ষুধার জ্বালা ভুলে যুদ্ধে যেতে হবে তাকে…
এই যুদ্ধে শীত-বসন্ত ,আষাঢ় -শ্রাবন
সব ঋতুতেই ফুল কিংবা বৃষ্টি সবাই খুঁজলেও
এই শিশুটি ব্যতিক্রম।
সে অল্প একটু জীবন খোঁজে,হোক তা ডাস্টবিনেও…
অবশেষে জীবন এবং ক্ষুধা মুখোমুখি হলে
ক্ষুধার্ত পেট ভরে তার এক আঁজলা জলে।
এবারও মন ভরে না ।
মাত্র দু’টাকায় এই অস্থি জড়ানো শহরে
কতবারই আর সে সংগ্রামের খাতায় নাম লেখাবে ?
এই পথশিশুটির কথা আমি
বহুবার লিখতে চেয়েছি ।
কিন্ত লিখলেই আমার কবিতাগুলো হেরে যায়,
যদিও কবিতারা সংগ্রামে যায়নি ।
হয়তো আকাশের উজ্জ্বল তারাগুলো
ঝরতে ঝরতে জেনে গেছে তাদের আগেই
আকাশটা ভেঙ্গেচুরে মাটিতে পড়ে আছে ।
এই মাটিতেই মানুষ গড়ে তুলেছে কতশত প্রার্থনালয়
এরই মাঝে একজন না খেয়ে মরলে কার কি আসে যায় !
অন্নের বদলে ধর্ম রেঁধে গেলানো যায় না ঐ একজনকেই ।
গতকাল প্রার্থনালয়ে গিয়ে মিষ্টান্ন পেলাম ।
সম্ভবত কোন আনুষ্ঠানিকতা ছিলো,মনে নেই আমার।
মনে আছে কেবল মিষ্টান্ন বেশ ভালো ছিলো,
মিষ্টি খেতে গিয়ে এবড়ো থেবড়ো হয়ে
মুখ থেকে খানিকটা রাস্তায় পড়েছিলো ।
মুর্হতেই দৌড়ে এসে চেটেপুটে খায় সেই শিশুটি,
অনেক পূণ্য হয়েছে আমার গতকাল…
কিন্ত আজ কি হবে ?
আজ শিশুটি কি খাবে ?
নাকি তার শুস্ক খাদ্যনালীতে আমার
পূণ্যগুলো আজ পঁচে গলে গেছে ?
খালেদ মাহমুদ খান
১০/১০/২০২১