লিখেছেন : শম্পা ঘোষ
ঐ যে দূরে বাড়িটা যাচ্ছে দেখা –
ভাঙাচোরা ভগ্ন চেহারা নিয়ে রয়েছে দাঁড়িয়ে ।
নোনাধরা দেওয়ালের থেকে কোথাও কোথাও খসে গেছে ইট – তার বুকে স্পষ্ট ক্ষতর দাগ –
সেই দেহে কোথাও আবার লেগে আছে শ্যাওলার ছোপ –
যেন বাড়িটা দাঁত করে তাকিয়ে আছে আকাশ।পানে –
আগাছা গুলো ভীড় করে আছে ওর ভাঙা দেহের উপর –
শিকড় নিয়ে একেবারে গেড়ে বসেছে দেহে ।
দেখে মনে হয় ভিতটাকেও দিয়েছে নাড়িয়ে ।
বাড়িটার একদম গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে এক অতি প্রাচীন বট গাছ।
না জানি কত কাল ধরে আছে সে এই বাড়ির উঠোনে।
কত ভালো মন্দ , কত ওঠা পড়ার সাক্ষী হয়ে সে রয়েছে দাঁড়িয়ে !
কত ক্লান্ত পথিক তার থেকে পেয়েছে শীতল ছায়া –
কত শত নীড়হারা পাখিদের সে হয়েছে আশ্রয়স্থল ।
নিজেকে বিলিয়েছে কতজনের মাঝে শুধু জ্বালানি রূপে পোড়ার জন্য!
আজ সেও বড়োই ক্লান্ত – পরিশ্রান্ত ।
মুক্তি চাই মুক্তি – তারও আজ মুক্তি চাই ।
ওই দূরের আকাশ পানে সে আছে তাকিয়ে মুক্তির আশায় !
জানা নেই তার কবে পাবে সে তার আকাঙ্ক্ষিত মুক্তি —
বাড়ির বাগানটা ও আজ গেছে সম্পূর্ণ শুকিয়ে।
বাগানে আজ আর নেই ফাগুন !
বন্যরা আজ আর আসে না সে বাগানে –
পলাশে ফোটে নি ফুল
কোনো ভ্রমরের আনাগোনা আজ আর চোখে পড়ে না –
চারপাশের চেনা মানুষগুলো ও আজ হয়ে গেছে অচেনা ।
কিছু পরিচিত আওয়াজ ও আজ হয়ে গেছে ক্ষীণ –
আজও সেই ক্ষীণ স্বরে বুকের মাঝে ওঠে ঝড় –
অতল থেকে উঠে আসে স্মৃতিদের ঝাঁক ।
হৃদ পিঞ্জরে থাকা পোষা পাখিটা থেকে থেকেই ছটফট করে ওঠে।
স্বাধীন হয়ে সেও মেলতে চায় পাখা ওই নীলাকাশে ।
হারিয়ে যেতে চায় দূরে – অনেক দূরে ।
মেঘ হয়ে ভেসে বেড়াতে চায় অজানা অচেনা কোনো দেশে !
এ মায়ার সংসারে সবাই তো পারস্পরিক সহযোগিতায় বেঁচে থাকতে চায়।।