শ্যাম ফিরে এসো বাড়ি
-মীর সেকান্দার আলী খোকা
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
পৌষে ধানের ক্ষেত শূন্য,
কাস্তে হাতে বাড়ি ফিরছে কৃষক।
ক্ষেত পেরিয়ে দূরে-
গ্রামের মেঠো পথের কিনারায়
আটপেড়ে শাড়িতে দাঁড়িয়ে ষোড়শী।
উদাস ছল ছল চোখে
ডুবুরির মত সাগর বক্ষে ডুবে চলা
সূর্যের অন্তিম ইচ্ছার সাধ খোঁজে।
জানতে চাই ফিরে আসবে তো তুমি,
রাঙিয়ে প্রভাত ?
শ্যাম পুকুরে কতদিন হয়নি সাঁতার।
অনেক পৌষ গেছে চলে
একটু ছোঁয়া দিয়ে জীবনে রাঙিয়ে যৌবন,
আসবে বলে চলে গেছে শ্যাম দূর পশ্চিমে তোমার মতই।
এবারে খুব ঘন শীত কুয়াশার এসিডে দগ্ধ ঘাস-লতা,
খুব ইচ্ছে হয় দগ্ধ হতে শ্যামের ছোঁয়ায়।
শ্যাম শীত বোঝেনা,
বোঝেনা যৌবনের এমন রাঙাক্ষণ ভাটিতে মিলাই আমার।
আমি যেন নবান্যের সেদ্ধ ধানের গন্ধ,
কামুক চোখে চেয়ে দ্যাখে পড়শীর পাতাফাঁদ।
নিজেকে গুছিয়ে পথ চলি, পথেরও তো শেষ আছে !
বকুল কুড়াতে ইচ্ছে হয় এখনো সন্ধ্যা হলে
মনে হয় কলতান করে ছুটি প্রভাতে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাসে।
আঠারো পেরিয়েছি সেই কবে,
ভালো রাখবে বলে চলে গেছে শ্যাম উজানের দেশে।
সূর্যাস্ত দেখি-
দেখি মেঠো পথের দুরে মিলিয়ে যাওয়া শূন্য রেখা,
ধোঁয়াশা কেটে কখন শ্যাম ফিরবে বাড়ি।
দেখি সন্ধ্যা হলে বিল-দিঘী ছেড়ে আসা
পাতি হাঁস গুলোর ঘরে ফেরা,
হুহু করে মন কপোত কপতি যখন রাঙায় ঠোঁট ঠোঁটে
অধীর মিলন।
তপ্ত নিঃশ্বাসের সাথে ঝরে পড়ে ভেতরে পোষা
গোলাপের নির্যাস,
সেখানেও এসিড আছে প্রবাহিত হয় জল,
জলে বন রাঙায়, এসিড দাহ করে বন।
শীত হারিয়ে ইচ্ছাগুলো নুয়ে পড়ছে, চৈত্রের খরা দেখি,
শ্যাম,ফিরে এসো বাড়ি উজানের দেশ ছেড়ে।
তপ্ত রোদে লতাকে সমুন্নত রাখতে
ছায়ার ছোঁয়া বড় প্রয়োজন,শ্যাম ফিরে এসো বাড়ি।
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি-
জন্ম: ১৫ ই জুন, ১৯৬৬ ইং, বিভাগীয় শহর রাজশাহী। শৈশব কৈসরের অনেকটা সময় রাজশাহী অঞ্চলে কেটে গেছে। পাঁচ ভাই তিন বোন, আমি সপ্তম। পিতা মৃত: অবিভক্ত বাংলায় পিটিআই বাস করে শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘ সময়, পরবর্তীতে আরো সরকারি বিভিন্ন চাকুরীতে কর্মরত ছিলেন। মাতা মৃত: লতিফা খাতুন, তৎকালীন সময়ে মাইনোর পাস। ছোট থেকেই লেখালেখি তো অভ্যস্ত, দৈনিক সানসাইন রাজশাহী। দৈনিক উত্তরা+ষান্মাসিক সংগা দিনাজপুর। সাপ্তাহিক জনরব ঠাকুরগাঁও। মাসিক ম্যাগাজিন একদিন প্রতিদিন+প্রিয়তমেষু ঢাকা। বর্তমানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য অনলাইন সাহিত্য ম্যাগাজিন কবিতার পাতা +স্বরলিপি উল্লেখযোগ্য। প্রকাশিত বই একক কাব্যগ্রন্থ আলো ছায়া। সকলের আশীর্বাদ প্রার্থী।