খাওয়া দাওয়া

-কাশীনাথ হালদার

♦♦♦♦♦♦♦♦

‘মাথা খাওয়া’র দিব্যি দিয়ে কেউবা আছে বেশ,

‘চাকরি খেয়ে’ কেউবা কারো করছে জীবন শেষ।

‘ঘুষ খেয়ে’ কেউবা আবার নিজের পেটটা ভরে,

‘চুমু খেয়ে’ শিশু‌র গালে কেউবা আদর করে।

‘আছাড় খেয়ে’ হকচকিয়ে কেউবা ব্যথা পায়,

উল্টো কথা বলতে গিয়ে, ‘ডিগবাজি’ কেউ খায়।

‘মার খেয়ে’ কেউ হজম কোরে উল্টে মার দ্যায়,

‘গ্যাস খায়’ কেউ সারাটা দিন, কেউবা ‘হাওয়া খায়’।

‘খাপ খাওয়া’তে না পেরে কেউ ছাড়ছে আপনজন,

‘দোল খায়’ কেউ নাগরদোলায় নিয়ে বন্ধু-স্বজন।

‘গোল খেয়ে’ গোল শোধ না করে কেউ হারছে খেলায়।

‘ধাক্কা খেয়ে’ কেউবা আবার উঠছে অবহেলায়।

কিল-ঘুষি বা চড়-থাপ্পড় কেউবা খায় ক’ষে,

‘গালিগালাজ খেয়ে’ও কেউ আছে রসেবশে।

পাকে পড়ে ‘পাক খায়’ কেউ, কেউ বা ‘হোঁচট খায়,

‘হুমড়ি খেয়ে’ পড়ছে বা কেউ ‘টাল খেয়ে’ কেউ যায়।

বোকা হয়ে ‘ধোঁকা খায়’, কেউ ‘দিব্বি খেয়ে‍’ই বলে,

সদাই কেউ ‘কান‍মলা খায়’, কেউ কামড় খেয়ে চলে।

‘পরের মুখে ঝাল খায়’ কেউ, কেউবা ‘টাকা খায়’,

‘খাবি খেতে খেতে’ও কেউ কূলকিনারা পায়।

‘হাতে খায়’ ‘পাতে খায়’, কেউবা ‘বিষম খায়’,

‘কাঁটাঝাঁপ খায়’ বা কেউ চৈতে চড়কমেলায়।

প্রিয়জনের ‘ঘা খেয়ে’ কেউ মরমে যায় ম’রে,

‘ধোলাই খায়’ কেউ আবার চুরি ডাকাতি ক’রে।

রকমারি খাওয়া-দাওয়ার ফিরিস্তিটা স্বল্প,

চাইলে খেতে এসবগুলো খেতে হবে অল্প।

কেউবা আবার রেগে গিয়ে বলছে বোকা– বোকা,

খেয়েদেয়ে কাজ নেই তাই, খাওয়ার কথায় ধোঁকা॥

♦♦♦♦♦♦♦♦

কবি পরিচিতি-

  • নাম : কাশীনাথ হালদার
  • পিতা মাতা : প্রয়াত গোকুলচন্দ্র হালদার ও কিরণবালা হালদার।
  • জন্ম : ০৪ ডিসেম্বর ১৯৫৮, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর থানা এলাকার জেলেরহাট গ্ৰামে।
  • শিক্ষাগত যোগ‍্যতা : কলা বিভাগে স্নাতক (কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়)
  • কর্মজীবন : নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে, ৩৩ বছর (১৯৮৬ –২০১৮)
  • প্রকাশিত কাব‍্যগ্রন্থ : পুষ্পবিতান (বর্ণালী প্রকাশনী, ২০১১)।
  • সম্পাদিত পত্রিকা : “মাধুকরী” সাহিত‍্য পত্রিকা, ২০১৫ থেকে।
  • যেসব পত্র-পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত : সমাজশিক্ষা, বর্ণালী, দৈনিক স্টেটসম‍্যান, ভারতীয় বাংলা কাগজ, তত্ত্বমসি, মহিলা মঙ্গল, যুগসাগ্নিক, মাধুকরী, দক্ষিণের সাঁকো, বিপ্রতীপ, মাটির প্রদীপ, সাগরবেলা, ইত্যাদি।

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*