মায়ের জন্যে

-শ্যামল কুমার মিশ্র

⇒⇒⇒⇒⇒

খোকনের মন ভালো নেই

রোজ রাতে ঘুম ভেঙে সে খোঁজে মাকে

দূর আকাশে নক্ষত্রলোকে হাজারো তারার ভিড়ে

করোনা অতিমারি কেড়ে নিয়েছে কত মানুষ

হাজারো মানুষের ভিড়ে সে খোঁজে ঐ দুটো চোখ

যে চোখের ভাষা খোকনের বড় চেনা

রাত গভীর হয়

দূরে দু-একটা শেয়াল ডেকে যায়

রাতজাগা পেঁচা শব্দ করে ডানা ঝাপটায়

খোকন জেগে থাকে

হেঁটে যায় দূরে বহুদূরে রূপনারানের কূলে

ঝাপসা হয়ে আসে দুই চোখ

চিতার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে সেই চিরচেনা দেহখানি

হারিয়ে যাচ্ছে সেই গন্ধটুকু…

একরাশ বিষণ্ণতার মাঝে মনটা আনন্দে ভরে উঠে

মা এসেছেন, দাঁড়িয়েছেন শিয়রে

চিরচেনা সেই হাসি

সস্নেহে চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলেন—

ঐ দেখ খোকন, নতুন সূর্য উঠছে

পূর্ব দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ছে রক্তিম আভা

পাখিরা গান ধরেছে

শিশুরা সবুজ মাঠ পেরিয়ে দৌড়ে আসছে

লালি পিসি গাইছে উত্তরণের গান

ভয় পাসনে, ভয় পাসনে খোকন

আমি তো তোর কাছে কাছেই আছি

জয় হোক নতুন দিনের

আমি চিৎকার করে উঠি

ছুঁতে যাই মাকে

তরঙ্গের মাঝে হারিয়ে যায় মা

ভেসে থাকে স্নেহার্দ্র্য দুটি চোখ…

⇒⇒⇒⇒⇒

কবি পরিচিতি-

সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোট বেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর(বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র) হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে ৩২ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*