মানবতার কান্না
-বিমান বিশ্বাস
⊗⊗⊗⊗
এ কোন সকাল,
যা রাতের চেয়েও অন্ধকার!
আমরা তো এমন ভোরের আলোয় ভিজতে চাই না।
যে সকালে পাখির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙার কথা, সেখানে ঘুম ভাঙে ধর্ষিতা নারীর আর্ত চিৎকারে!
এ কোন সমাজ!
যে সমাজে অপরাধী শাস্তি পায় না,
নিরপরাধ কাঁদে বিচারের আশায়।
বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে দ্বারে দ্বারে ফেরে।
অপূর্ব হিংসার অনির্বাণ রেখা চারদিকে,
বিষাক্ত রক্তের অনুরণন গেছে বেড়ে।
আশ্চর্য নিশ্চুপ!
হিংসা, গ্লানির মৃত্যুপুরী এ সমাজ যেন,
শ্মশানের শান্তিতে ভরপুর।
হিংসার আগুনে জ্বলে গৌরবের প্রাচীন সভ্যতা,
রাত্রির আঁধারে মাতে দু’পেয়ে শিকারী দানব।
হানা দেয় তারা নারীর শরীর ছিঁড়ে খাওয়ার নেশায়।
লালসার আগুনে পুড়ে ছাই হয় কতশত নিষ্পাপ মুখ!
সূর্য তার প্রখরতা হারিয়ে হয়েছে আজ মলিন, জ্যোৎস্নার চাঁদ আঁধারে গেছে ভিজে, সহস্র দানব খোঁজে সহস্র কোটি নারীর শরীর।কুশাষনের বর্ষায় ধুয়ে যায় সকল পাপের চিহ্ন!
নির্যাতিতার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ভেঙে,
কেটে পুড়িয়ে দেওয়া হয় রাত্রির অন্ধকারে।
নিষ্ঠুরতার সকল সীমা লঙ্ঘন করে, দ্বারে দ্বারে হানা দেয় নির্মম শোষক।
মূর্খেরা স্বর্গ ভেবে মাতে উল্লাসে!
অশ্লীল যৌনকুয়াশায় ঢাকে সমগ্ৰ লীলাভূমি।
রক্ত পানীয়ে স্নাত হয় আঁধারে ঢাকা মন।
উঁচু,নিচু ভেদাভেদ, ধর্মীয় ভেদাভেদ, কুসংস্কার নামক বদ্ধ জানালায় উঁকি দেয় অজানা ভয়।যা মুহূর্তে স্পর্শের হাতছানিতে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় জ্ঞানের আলোর শিখা।
নির্যাতিতা পায় না তার বেঁচে থাকার অধিকার। চারদিকে শুধু মৃত্যুর হাতছানি, দেবী রূপ ধারিণী প্রতিটি মায়েরা ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত।
তবুও আশায় বেঁচে থাকা!
গর্জে উঠুক সমগ্ৰ সভ্য সমাজ। শান্তির কোলাহলে মুখরিত হোক আসমুদ্র হিমাচল। মানবতার জয় গান শুনি কান পেতে সমুদ্রের অন্তহীন কলধ্বনিতে।
মানুষ খুঁজে পাক তার সত্যিকারের পরিচয়।
জয় হোক মানবতার।
⊗⊗⊗⊗
কবি পরিচিতি-
আমি বিমান বিশ্বাস। পিতা- স্বর্গীয় নারায়ণ বিশ্বাস, মাতা- শ্রীমতী নির্মলা বিশ্বাস। বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর মহকুমার অন্তর্গত পানিহাটি সোদপুরের নাটাগড়ে। আমি ভূগোলে এম.এ করেছি। আমার লেখালিখির হাতেখড়ি করোনা কালীন সময়ে ০৬/০৪/২০২০ তে। লেখালিখির জগতে আসার পেছনে আমার কোনো মহাকাব্যিক আখ্যান নেই। হয়তো কালের নিয়মে আমার এই জগতে আসা। সেই থেকে আপনাদের ভালোবাসায় মনে যা আসে তাই লেখার চেষ্টা করি মাত্র। বাকিটা আপনাদের আশির্বাদ।
আপনাদের আশির্বাদে কবিতা কুটির সাহিত্য পত্রিকা,ভাষাসরিৎ সাহিত্য পরিবার এবং নবজাগরণ সাহিত্য পত্রিকার তরফ থেকে সম্মাননা পেয়েছি। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে দুটো যৌথ কাব্য “মুক্ত আকাশ” এবং “মুক্ত বিহঙ্গ” গ্ৰন্থ প্রকাশ পেয়েছে। কোলকাতা থেকে যৌথ উদ্যোগে “স্বপ্নের উড়ান” কাব্য গ্ৰন্থ প্রকাশের অপেক্ষায়। এছাড়া কিছু লিটল ম্যাগাজিনে কিছু লেখা প্রকাশ পেয়েছে। বিবেকানন্দ, শরৎচন্দ্র পড়তে ভালোবাসি।