কেউ চাই না
-আবু ওবাইদুল্লা আনসারী
⇔⇔⇔⇔⇔
তোমার শিশু যখন কলমের কালি মেখে দাগ ফেলছে জামায়,
ওরা তখন কয়লাখনিতে কয়লা মাখে,
কেউ ইট খাদানে কাদা মাখে,
,নুন ভাত জোগাড় করতে কেউ আবার চায়ের দোকানে থালা ধুতে ব্যস্ত,
কারখানাতে কাজ করতে করতে,
কেউ সিলকোসিস,কেউ ডিসলেক্সিয়া,
আবার কেউ ক্যান্সারে হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুনছে,
কেউ আবার অসাবধানতা বশত কাজ করতে গিয়ে ভোরের তারা গেছে,
সবাই অপেক্ষায় আছে,
একটা নাটক দেখার অপেক্ষায়,
বছরে একটা দিন রাজা থেকে শুরু করে সবার মনে পড়ে,
কত মঞ্চ সাজবে,কত কলরব,কত পদযাত্রা,
সবার একটা কথা শিশুশ্রম বন্ধ করো,
কেউ কয়েকটা বাচ্চাকে হয়তো স্কুলে ভর্তিও করে,
রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে পড়ে যাওয়া পঙ্গু ছেলেটা কলম ধরতে পায় সেদিন,
তারপর দিন চলে যায়,
আবার কয়লা খনি,চায়ের দোকান, ইটের খাদানা,,
আবার অযত্নে কালো হতে থাকে এদের ভবিষ্যৎ গুলি,
শিশুশ্রম বিরোধী দিবস শুধু ক্যালেন্ডারের পাতায় শোভা পায়,
বাস্তবতার কঠোরতা গ্রাস্ করে ফেলে এদের,
এক মুঠো ভাতের জন্য স্কুল টা আবার স্বপ্ন হয়ে যায়,
কোনো এক তীক্ষ্ণনখর যুক্ত চিল এদের ভবিষ্যৎ কে শ্রমের আড়ালে চিরে দেই,
বিবেকহীন কিছু পিশাচের দল আবার এদের দারিদ্রতাকে কাজে লাগায়,
আসলে শিশুশ্রম বিরোধী দিবস বলে কিছুই থাকে না,
যা থাকে তা লোক দেখানো সহানুভুতি,
ওরা তো শুধু শিশু নয়, শ্রমিকও বটে ,
সমাজের সমস্ত ঘৃণ কাজ গুলি ওদের,
তাই মানায় না ওদের তোমাদের সখের স্কুলে,
ছেলের সামান্য পিনকাঁটায় ফুটে যেতে হাসপাতালে যাওয়া কোন বাবার চোখেও পড়ে না ,
সিলিকোসিস আক্রান্ত কোনো শ্রমিক শিশু,
কালের আবর্তনে যখন এই পরিণতি তবে কেন এত হইচই একটা দিন পালনের,
কেন এত সহানুভুতি,
কখনো কি এর বিরোধিতা হয়?
কখনো কি স্কুলে পড়া কোনো একটা ছেলের বাবা ,
এদের নিজের ভেবে কাছে টেনে নিয়েছে,
রাজারা কি সত্যিই শিশুশ্রম বন্ধ করতে চায়,
শিশুশ্রম বিরোধী দিবস বলে কি আদৌও কিছু আছে,
আসলে হাজার প্রশ্নের ভিড়ে এই ভাবেই বিলীন হয়ে যায় এদের ভবিষ্যৎ,
আবার-
কয়লাখনিতে,চায়ের দোকানে,ইট খাদানে,ডাক পড়ে এদের,
আবার ডিসলেক্সিয়া,সিলিকোসিস,ভোরের চাঁদ,এক মুঠো নুন ভাতের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়,
ইতিহাস হয়ে যায় হাজার হাজার প্রতিভা।
বছরের পর বছর ,প্রহরের পর প্রহর এদের নিয়ে কথা হলেই,
কেউ কাছে টেনে নেয় না এদের,
আসলে কেউ শিশুশ্রম বন্ধ করতে চাই না,
কেউ চাই না সত্যিই,শিশুশ্রম বিরোধী দিবস পালন হক।
⇔⇔⇔⇔⇔
কবি পরিচিতি-
কবি আবু ওবাইদুল্লা আনসারী,ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এক গ্রামে ২০০১সালে জন্মগ্রহণ করেন।পিতা হুমায়ুন কবীর, মাতা মুনেফা বিবি,বর্তমানে সে প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে B.Sc তে পাঠরত,ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা কবিকে ভীষণ ভাবে নাড়া দেয়।বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হলেও সাহিত্যের প্রতি কবি অনুরাগী,কবির মূল রসদ বাস্তব পৃথিবী।