কথা ছিল

-পপি প্রামানিক

⊆⊇⊆⊇⊆⊇⊆⊇⊆⊇

কথা ছিল এক সাথে সারাটি জীবন কাটাবো, বাঁধবো ছোট্ট সুখের নীড়।
কথা ছিল সুদীর্ঘ জীবনের বাঁকি দিনগুলো একই সাথে হাঁটবো, একই সাথে পাশাপাশি থাকবো।
কথা ছিল বিশ্বাস, সম্মান এবং ভরসা দিয়ে দু’জন দু’জনের আজীবনের সমব্যথী হবো।
সেদিন সীমাহীন কথা ছিল কিন্তু আজ একটিও নেই।
হয়তো আমাদের চলার পথটা এতোটা মসৃণ ছিল না সেদিন।
তারপরও সেদিন অভিমানের সীমা লঙ্ঘন করলে অনেক কিছুই হতে পারতো, রয়ে যেতো অনেক কথা——
কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে হয়নি কিছুই!
চাইলেই কাউকে নিজের করে নাকি পাওয়া যায় না, তার জন্য ভাগ্য লাগে।
সেই ভাগ্যটা হয়তো আমার কোনোদিনই ছিল না।
হঠাৎ স্বর্গীয় এক সুধার পরশে দু’টি হৃদয় এক হয়ে একটি মধুর সম্পর্কের বাঁধনে বাঁধা পড়েছিল ঠিকই,
কিন্তু সেই সম্পর্কের যত্ন নিতে পারিনি, পারিনি সম্পর্কের মর্যাদা দিতে।
আসলে সম্পর্কগুলো বাতাসের মতো নিস্তব্ধ হলে আশেপাশে থেকে যেতো।
কিন্তু সম্পর্কগুলো কখনও কখনও বৃষ্টির মতো ঝরেও পড়ে—–
অথচ একদিন আমার মনের ভালোবাসার মন্দিরে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলে তুমিই, তুমিই আমার স্বর্গ সুখের বিচরণ সাথী ছিলে।
তবুও জীবনের পথে এক সাথে হাঁটা হয়নি আমাদের!!
তাই তো কখনও শূন্য হৃদয় তপ্ত দহনে দগ্ধ হয়েছে, আবার কখনও বেদনার নোনা বৃষ্টিতে সিক্ত হয়েছে বার বার —–
জীবন নিয়ে গল্প লেখা সহজ হলেও গল্পের মতো জীবন সাজানো অনেক কঠিন।
আমিও পারিনি জীবনটাকে গল্পের মতো সাজাতে—–
অগোছালো ছন্দহীন এক জীবন বয়ে চলেছি মাত্র!
তবে অনেকটা মরেও বেঁচে আছি “কবিতার পাতা” পরিবারে ঠাঁই নিয়ে।
আমার যাপিত জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত এখন সেখানেই পদচারণা করি!
আমার দুঃখ, কষ্ট, দীর্ঘশ্বাস, দগ্ধ হৃদয়ের কান্না, নির্যাতন সবই সহ্য করে নেয় “কবিতার পাতা”।
শুধু সহ্যই করে না সাথে সম্মাননাও দেয়।
“কবিতার পাতা” পরিবারের সুদীর্ঘ পরিসরে কত জ্ঞানী, গুণী, প্রতিভাবান সাহিত্যিক নক্ষত্রের বিচরণ; তাঁদের পাশে ঠাঁই পেয়েছি আমিও।
সত্যি এ যেন পরশ পাথর, আমার বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়।
জীবন সৈকতে নিকষ অন্ধকারে আমি যখন দিশেহারা ঠিক তখনই পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল—–
আমার মনের বিগলিত সমস্ত প্রলাপকে সানন্দে সাজিয়ে রাখে এই প্রিয় পরিবারটি।
সেই এখন আমার চলার পথের পাথেয়, তার সাথেই অতিবাহিত হচ্ছে আমার জীবন, রাত্রি যাপনও তারই সাথে।
প্রতিনিয়তই রাতের অন্তিম প্রহরে গুনগুনিয়ে তাই গেয়ে উঠি রবি ঠাকুরের সেই বিখ্যাত গান —–
“কি করিলে বলো পাইবো তোমারে
রাখিবো আঁখিতে আঁখিতে,
এতো প্রেম আমি কোথা পাবো নাথ
তোমারে হৃদয়ে রাখিতে”।

⊆⊇⊆⊇⊆⊇⊆⊇⊆⊇
পরিচিতঃ ১৯৮৩ সালের ১৬ আগষ্ট কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলায় আমার জন্ম। পিতা (সদ্য প্রয়াত) আশুতোষ প্রামানিক একজন শিক্ষক ছিলেন। মাতা কানন বালা প্রামানিক একজন সার্থক গৃহিণী। স্বামী বিশ্বজিৎ সাহা একজন শিক্ষক। আমিও পেশাগত জীবনে শিক্ষকতা করি । আমি রাজ্যহীন দুই রাজ কন্যার জননী। ছোট থেকেই গল্প এবং কবিতা পাঠের প্রতি আকর্ষণ ছিল। আমার ছায়া সঙ্গী এক বন্ধুর অনুপ্রেরণায় উৎসাহিত হয়ে বর্তমানে অন লাইন ভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপে একটু একটু লিখতে চেষ্টা করি।

 

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*