সভ্য সমাজ মুখ খোল

-প্রদীপ কুমার মাইতি

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

ওকে রোজ পথে দেখি,

রাত জাগা পাখির মত।

কোলে কঙ্কালসার শিশু,

কাঁদে অবিরত।

হাত পেতে চায় পথিক পিছু,

ছেলের ক্ষিদায় চাইছে কিছু।

পথে হাঁটে বাবু মহাজন,

করেনি দয়া কেউ একজন।

ঐ তো খাবার একটু দুরে,

খোলা রাজপথে রাস্তার মোড়ে।

ডাষ্টবিনে খাবার আছে ভরে,

ক্ষুধার্ত শিশু ডাষ্টবিন ধারে।

ছোট দুটি পায়ে টলমলকরে,

শিশুর মুখে হাসি ফুটে।

খাবার তার গেছে জুটে,

আহার কিছু জুটবে পেটে।

মা খুঁজে আনে ডাষ্টবিন থেকে,

একটি মস্ত প্যাকেট হাতে।

কুকুর ছিল তক্কে তক্কে,

সুযোগ খুঁজে লুটে নিতে।

শুরু এবার প্রতিযোগিতা,

কুকুর মুখে প্যাকেট গোটা।

ছিঁড়ল প্যাকেট খাবার কোথা,

আছে ভর্ত্তি মাংস কাঁটা।

ধুলোয় পড়ে মাংস কাঁটা,

অশ্রু ঝরে মায়ের চোখে।

শিশু কুড়োয় মুঠোয় সেটা,

ক্লান্ত বিকেল নিরবে দেখে।

মা তুলে নেয় ছেলেকে বুকে,

ফিরে গৃহে ঝুপড়ির দিকে।

লোভী শয়তান ছিল ওঁৎ পেতে,

কামনা ছিল বহু দিন থেকে।

ঝুপড়ির ভিতর জ্বালিয়ে কুপি,

লাবণ্য দেখে ছেলের আঁখি।

লোভী সয়তান ঝুপড়ী তে ঢোকে,

লাবন্য কে বললো ডাকি।

কি বলছো নবীন কাকা?

পেটে আছে ক্ষিদার ব্যাথা।

চাইনা তবু তোমার টাকা,

ইজ্জত বিক্রি হয়না হেতা।

ছেলের খাবার কিনবি এতে,

তুই ও শুখে থাকবি ভালো।

একটু সময় কি আর তাতে,

জানবে না কেউ নিভলে আলো।

অসহায় লাবণ্য জোড় হাতে,

ভিক্ষা চায় সে লজ্জা বাঁচাতে।

ঝাঁপিয়ে নবীন মুখটি চেপে,

ক্লান্ত লাবণ্য না পারে চেঁচাতে।

নিভলো সেথায় কুপির আলো

ইজ্জত আজ পন্য হলো

গায়ের জোরে কেড়ে নিলো।

সভ্য সমাজ মুখ খোল।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

‌কবি পরিচিতি- আমি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত খেজুরী থানর গ্রাম কামদেবনগর পোস্ট কলাগেছিয়া এর বাসিন্দা। একটা সময়ে কবিতা লিখতাম। কবিতাকে ভালো বাসতাম। বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারিনি। অভাবের তাড়নায় কলেজের গন্ডিও পেরোতে পারিনি। প্রচণ্ড দারিদ্র্যতার মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছি।আজ জীবন অবসরে অতীত অভ্যাসকে সঙ্গী করে আবার লেখা শুরু করেছি। মনের মাঝে লুকিয়ে রাখা কষ্ট দুঃখ কান্না ব্যাথা গাঁথা স্মৃতিময় কথা গুলোকে নিজের মত করে লিখি মাত্র।হয়তো আমার লেখাতে কোন গভীরতা নেই,ঝর্নার মতকোন গতিও নেই,নেই কোন ছন্দমিল অন্তমিল। তবুও আজ লিখতে বড় ভালোলাগে। অনলাইন পত্রপত্রিকায় টুকটাক লেখালেখি করি।শোষনহীন সমাজের স্বপ্ন দেখি।

 

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*