ঝরাপাতা গো! আমিও তোমারই মতো
-পপি প্রামানিক
⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔
ঝরাপাতা গো! আমিও যে তোমারই মতো —–
দুঃখ শত শত, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ,
আরও রয়েছে সহস্র ক্ষত!
ঝরাপাতা গো! আমি তোমাদেরই দলে—-
বন্ধু ভেবে নাও গো কাছে যেও না কভু ভুলে।
তোমাদের কান্না নাকি কেউ শোনে না কখনও,
যত আছে দুঃখবিলাস আমাকেই শুনিও।
সতত বন্ধু হয়ে থাকবো আমি তোমাদেরই পাশে,
আমিও দুঃখী তোমাদেরই মতোই —-
চেয়ে থাকি তাই সমব্যথীর আশে।
তুমি বিবর্ণতায় কষ্ট পাও, হৃদয়ে বাজে মর্মর ধ্বনি,
দুঃখের অনুভুতি ঘোচাতেই আসবে সুখ—-
ঐ শোনা যায় বসন্তের পদধ্বনি।
নবপল্লবের সিক্ত পরশে উঠবে প্রকৃতি হেসে,
ঝরাপাতা গো! ওদের আনন্দ দিতে —-
ছেড়ে দাও স্থান একটু পিছিয়ে এসে।
ধরনীকে সতেজতায় ভরিয়ে দিতে,
অক্সিজেনের ভারসাম্য বজায় রাখতে,
নবীনদের বড় প্রয়োজন,
ঝরাপাতা গো! মুছে ফেলো মর্মর ধ্বনির শুষ্ক বেদনা,
আমরা যে এখন নই কারোই প্রিয়জন।
পুষ্পে পুষ্পে ভরবে শাখা, উড়বে অলি ফুলে ফুলে,
প্রকৃতি মুখরিত হবে কোকিলের কুহুতানে,
ঝরাপাতা গো! আমরা সুখ খুঁজবো শুধুই ওদের পানে।
প্রকৃতির বাহারি সাজে বসন্ত উৎসবে
মাতবে সবাই এ যে সময়ের পালা বদল,
হয়তো দেখবে না কেউ চেয়ে, থাকবে না কেউ পাশে—-
যখন ঝরবে আমাদের দুঃখের বাদল।
দুঃখের আগুনে দগ্ধ হয়েই এসো- দেখি নবীনদের জয়,
অন্যদের সুখী দেখেই আমরা হবো আত্মতৃপ্ত,
এ নহে আমাদের পরাজয়।
⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔
কবি পরিচিতঃ
পপি প্রামানিক (সহকারি শিক্ষক), পিতাঃ আশুতোষ প্রামানিক (সদ্যপ্রয়াত), মাতাঃ কানন বালা প্রামানিক, স্বামীঃ বিশ্বজিৎ সাহা, আমি রাজ্যবিহীন দুই রাজকন্যার জননী। ভালো লাগে গান শুনতে, বই পড়তে, ছবি তুলতে, রান্না করতে। আর বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে অবসর সময়ে আপন মনে লিখতে।