জীবনের গোধূলি বেলায়

-পপি প্রামানিক

≈≈≈≈≈≈≈≈≈

জীবনের গোধূলি বেলায় এসে কেন জানি

বার বার স্মৃতিলোকে হারিয়ে যাই।

কারো কারো জীবনের গোধূলি বেলার আলোটুকু

অসময়ে কালো মেঘে ঢেকে দেয়।

গোধূলি থেকেই পৌঁছে যায় জীবনের অন্তিম লগ্নে!

এসব ভেবে মাঝে মাঝেই হারিয়ে যাই

শৈশবের গোধূলি লগ্নে।

আহা কি মধুময় ছিল সেই ক্ষণ গুলো!

স্কুল থেকে ফিরে নাকে মুখে কিছু গুঁজেই

বাড়ির পাশের মাঠে ছুট—-

একই বয়সী কতগুলো মেয়ের হৈচৈ —

কানামাছি, বউচি কখনও বা গোল্লা ছুট!

বাপির কড়া শাসন, মায়ের বকুনি!

তবুও বাসায় ফিরতে গোধূলি বয়ে যেতো ।

ঠিক এভাবেই কেটে গেছে দূরন্ত শৈশব এবং

চাঞ্চল্যকর কৈশোর।

খুব দ্রুতই সময়ের হাত ধরে গোধূলি পৌঁছে যেতো

ধূপদীপ জ্বালানো সন্ধ্যায়।

আজ জীবনের গোধূলি বেলায় বসে বড্ড মনে পড়ে

তোদের সবার কথা।

কেমন আছিস তোরা?

তোরা কি আমাকে ভুলে গেছিস?

নাকি আমার মতোই হারিয়ে যাস স্মৃতির ভেলায়?

তোদের কি মনে পড়ে সেদিনের কথা?

যেদিন কালো মেঘে ঢেকে বড্ড অসময়েই

নিভিয়ে দিলো কুসুমের জীবনের সব টুকুন আলো।

গোধূলি পেরিয়ে যখন সন্ধ্যায় তারাদের খেলা চলে—

তখন আমি তারাদের ভীড়ে কুসুমকে খুঁজতে থাকি।

প্রতীক্ষার প্রহর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে।

কিন্তু আমি তাকে খুঁজে পাই না।

ক্লান্ত মনে এক সময় নিদ্রামগ্ন হই!

হঠাৎ তারাদের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসে ভোর —-

ফুলের সাজি হাতে পূজার ফুল সংগ্রহে বেড়িয়ে পড়ি।

সদ্য প্রস্ফুটিত সহস্র কুসুমের ভীড়ে খুঁজে ফিরি

আমাদের হারিয়ে যাওয়া কুসুমকে—-

একটা সময় চোখ ঝাপসা হয়ে আসে,

কিন্তু কুসুমের দেখা পাই না।

এভাবেই জীবনের গোধূলি থেকে হঠৎ একদিন

পৌঁছে যাবো জীবনের অন্তিম সায়রে।

≈≈≈≈≈≈≈≈≈

কবি পরিচিতঃ

পপি প্রামানিক, সহকারি শিক্ষক, কালুখালী, রাজবাড়ী, বাংলাদেশ। কবিতা পড়তে ভালোবাসি। বর্তমানে মনের কথাগুলো সাজিয়ে লিখতে ভালোবাসি। কতটা লেখা হয়, সেটা পাঠকই ভালো বলতে পারবেন।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*