দরজা
-শ্যামল কুমার মিশ্র
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
বন্ধ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ।
ভেতর থেকে জীবন জিজ্ঞাসা করে–কে তুমি?
ওপার থেকে ভেসে এলো– ‘আমি ভালোবাসা’
‘ভালোবাসার কোন ঠাঁই নেই তুমি ফিরে যাও’
‘আমি ফিরে গেলে তোমার রইল কি?
দরজা খোল, প্রবেশের দাও অধিকার’
‘না, তোমার সান্নিধ্যে আমি দুর্বল হয়ে পড়ি
আমার প্রবহমানতা নষ্ট হয়’
‘তা হয় না বন্ধু, তুমি সুন্দর হও
আমার সাথে আসবে প্রেম, অনন্ত প্রেম
‘তোমার প্রবহমানতা অর্থবহ হবে
তোমার হিংসা দূরীভূত হবে
উন্মুক্ত বাতায়নে তোমায় ছুঁয়ে যাবে মৃদু সমীরণ
চন্দ্রমা এসে কানে কানে বলবে তুমি সুন্দর!
তোমার অধরে চুমু এঁকে যাবে
তুমি সুন্দর থেকে সুন্দরতর হয়ে উঠবে’
ধীরে ধীরে জীবন জেগে ওঠে
হাট করে খুলে দেয় দরজা
ভালোবাসার পরশ ছুঁয়ে যায়
জীবন বলে ওঠে— তুমি আগে এলে না কেন বন্ধু? দেখছ না–কত রক্ত কত হিংসা
সিরিয়া দামাস্কাস, ইরানের প্রান্ত জুড়ে মানুষ মরছে
জীবন হারিয়ে যাচ্ছে প্রেমহীনতার বেড়াজালে
‘আমি তো অর্গলমুক্ত জীবন চেয়েছি
ক্ষমতা চাইনি, ভালোবাসা দিতেই চেয়েছি
মরুঝড়ে তা যেন কখন হারিয়ে গেছে
জীবনের দুচোখে জল
ধীরে ধীরে উন্মুক্ত হয় সব দরজা
জীবন বয়ে চলে ভালোবাসায় মিশে…
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোট বেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …