আবছায়া অতীত
-শ্যামল কুমার মিশ্র
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
বাতায়ন পাশে বসে থাকে সুনীল
এক ফালি রোদ এসে পড়েছে
শীতের ঘোমটা সরিয়ে কত ছবি এঁকে যায়
পাখির গানে মুখর হয়ে ওঠে চারদিক
সুনীল খুঁজে চলে ফেলে আসা অতীত
রহিম চাচা চলেছে কলসি ভর্তি গুড নিয়ে
আদুল গায়ে পিছে পিছে ছেলের দল
নদীর পাড়ে গিয়ে থামে গরুর গাড়ি
জলিল ভাই ডাক পাড়ে–
‘তাড়াতাড়ি তুলি দাও কত্তা
আজ কোটাল আছে
সকাল সকাল জোয়ার আইব’
কলসী ভর্তি গুড় নিয়ে ভেসে যায় জলিল
শীত এলে জলিলদের মন ভরে ওঠে
গঞ্জের হাটে বিক্রি করে
নাও ভাসায়
বউয়ের জন্য কিনে নেয় দুগাছা কাচের চুড়ি
ভরা যৌবন নিয়ে অপেক্ষায় থাকে বৌ
রাত দুপুরে ঘরে ফেরে জলিল…
শীত-সকালে সব যেন জলছবি
সুনীল হেঁটে চলে অতীতের ধারাপথে
চোখের সামনে ভেসে ওঠে আরে এক ছেলের মুখ
মীরার হাত ধরে চলে চলেছে রূপনারানের তীর ধরে
ধীরে ধীরে মেয়েটি হারিয়ে যায় কুয়াশার আড়ালে ছেলেটি চেয়ে থাকে নির্নিমেষে
টপটপ করে কুয়াশা জল হয়ে ঝড়ে পড়ে
রোদ্দুর ওঠে কুয়াশা হারিয়ে যায়
ছেলেটি খুঁজে ফেরে মীরারে..আবছায়া আলো আঁধারে
নিরন্তর এখন খোঁজ যেন
রূপনারান জেগে থাকে ছেলেটির তরে
কবে কোন পৌষের প্রত্যুষে
যদি দেখা হয় হারিয়ে যাওয়া মেয়েটির সাথে…
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোট বেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …কবি