রক্তে লেখা ছিলো
-স্মৃতি দাস মিশ্র
⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔
দেশমাতৃকার পূজার বেদী যে রক্তে ভেজা ছিল,সে রক্তের কোনো জাত ছিল না।
বীর বিপ্লবী নেতাজি সুভাষচন্দ্র যে রক্ত চেয়েছিল,সে রক্তের কোনো জাত ছিল না।
ব্ল্যাড ব্যঙ্কে সঞ্চিত যে রক্ত মানুষের জীবন বাঁচায়, সে রক্তের কোনো জাত নেই।
রক্তের জাত নেই,—-
কবি, শিল্পী,সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সমাজসেবী শিল্পপতি,সেলিব্রেটিদের।
তবে রক্তের জাত ছিল,—-
শ্রমিক কৃষক মুটে মজদুর মেহনতি মানুষের।
সেই জাত ভেদাভেদের কুসংস্কারের নির্মমতার স্বীকার হোলো দুটি নিঃষ্পাপ জীবন।
সহজ সরল উদার আকাশের বুকে,
সাতরঙে রাঙা শুদ্ধ প্রেমের খুশির প্রভা ছড়িয়ে দিল আমিনা।
আকাশের বুকে খুঁজে পেয়েছিল,সুখ স্বপ্ন আশা ভরসার স্থায়ী ঠিকানা।
খুশিতে ভরা স্বচ্ছ নীলাকাশ একরাশ প্রত্যাশার স্বপ্ন নিয়ে, আঁকড়ে ধরতে চেয়েছিল সেই সাতরঙে রাঙা রামধনু।
অন্তহীন ভাবনার স্রোতে ভেসে চলেছে প্রেমের তরী।
উচ্ছ্বাসের জোয়ারে আশার তরী ধাবিত মূল গন্তব্যের ঠিকানায়।
নব বসন্তের মৃদুমন্দ হাওয়ার তালে তাল মিলিয়ে চলেছে জীবনের লক্ষ্য পথে।
রাঙা পলাশের মৃদু গন্ধ মিষ্টি প্রেমের চেনা ছন্দ আজ মিলেমিশে একাকার।
আকাঙ্খিত দুটি মন চাওয়া পাওয়ার পরিসমাপ্তি ঘটাতে চায়, ভালোবাসার কুঁড়ে ঘরের মাঝে।
কখন আসবে সে শুভ লগন হবে কি মধুর মিলন? সেই প্রতিক্ষায় প্রহর গুনছে দুটি প্রাণ।
হঠাৎ আকাশের বুকে ঘনকালো হতাশার মেঘ রেখা! হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক ভয়ঙ্কর হুঙ্কারে কেঁপে ওঠে আকাশের বুক।
মুহুর্তেই মুছেদিল সেই খুশির রামধনু।
আকাশের বুক থেকে ঝরে পড়ছে নিদারুণ বেদনার অশ্রু ধারা!
ভরসার তরী নিরাশার বালুচরে বন্দী।
শুরু হোলো সর্বনাশা ভয়ঙ্কর তুফান!
নিষ্ঠুরতার প্রলয় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেল সেই জীবন তরী!
নীরবে নিঃশব্দে নিভৃতে আত্মহত্যায় জীবনের যবনিকা হোলো দুটি নিঃষ্পাপ নিরপরাধ জীবনের।
কারণ ঐ হিন্দু মুসলমান লেখা ছিল তাদের রক্তে।
⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔
কবি পরিচিতি ঃ—
স্মৃতি দাস মিশ্র, স্বামী ঃ—সত্যব্রত মিশ্র, গ্রাম+পোঃ-জনকা,থানা- খেজুরী,পূর্ব মেদিনীপুর,পশ্চিম বঙ্গ। কবিতা লেখা শুরু ২০২১