আমার সুভাষচন্দ্র
-শ্যামল কুমার মিশ্র
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
আপন মনে ভারতবর্ষের ছবি এঁকে চলেছে খোকন
এক অখন্ড ভারতবর্ষ
নামহীন গোত্রহীন ভারতবর্ষ
ভালোলাগার ভালোবাসার ভারতবর্ষ
হঠাৎ আঙুলে লেগে উল্টে যায় দোয়াত
কালিমাখা হয়ে যায় ভারতবর্ষ
বড় অচেনা মনে হয়
খোকন তন্ময় হয়ে খুঁজতে থাকে সেই ভারতবর্ষকে
সুভাষের ভারতবর্ষ, ক্ষুদিরামের ভারতবর্ষকে
আদুল গায়ের ওই ছোট্ট ছেলেটি চলেছে বাবার কারখানা অভিমুখে,
হাতে ধরা তোমার ছবি
ওখানে গেটের সামনে পালিত হবে তোমার জন্মদিন যেখানে ধর্ণায় বসে রয়েছে হাজারো শ্রমিক
স্লেটের গায়ে জ্বলজ্বল করছে ৬০০
যন্ত্রণার ৬০০, ব্যথার ৬০০ দিন
ছোট্ট ছেলেটি চেয়ারের উপর তোমার ছবিটা রাখলো
উঠে দাঁড়াল হাজারো ভুখা মানুষ
সমাবেত কন্ঠে গেয়ে উঠল সেই গান–
‘কদম কদম বড়াহে যা, খুশিকে গীত গায়ে যা’…
ছোট্ট ছেলেটির দুচোখ আনন্দে ভরে ওঠে
চিৎকার করে বলে ওঠে—আমার সুভাষচন্দ্র
ঐ দেখো আসছে– আমার সুভাষচন্দ্র
নিমেষেই রমেশ রুমি সৌমিয়া আব্দুলের কন্ঠে ধ্বনিত হয়— আমার সুভাষচন্দ্র…
খোকন যেন শুনতে পাচ্ছে হ্রেষা ধ্বনি
ঘোড়ার পিঠে এগিয়ে আসছে সুভাষ
হাতেধরা কালিমা লিপ্ত ভারতবর্ষ মাঝে ফুটে উঠছে সেই মুখ
আসমুদ্র হিমাচল জুড়ে উজ্জ্বল এক মুখ
বড় চেনা ভালবাসার মুখ—সুভাষচন্দ্র
ছোট্ট ছেলেটির দুচোখ জলে ভরে উঠছে
কারখানার গেটে উর্মিলা মাসি তখন গাইছে সেই গান—
‘তোর আপন জনে ছাড়বে তোরে
তা বলে ভাবনা করা চলবে না’…
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোট বেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …