বসন্ত এসে হাসায় প্রকৃতি
-সত্যজ্যোতি রুদ্র
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
ঋতুর চক্রাকার আবর্তনে
প্রকৃতি যেন সলাজ গুণ্ঠনে ছিলো এতদিন—
আজ ঋতুরাজ বসন্ত
প্রকৃতির দুয়ারে ব্যস্ত কানাকানিতে
সখ্যতা গড়ে তোলে নব নব আঙ্গিকে।
চারিদিকে আবীরের ছড়াছড়ি,
জড়তা কাটিয়ে জেগে ওঠে পরমা সুন্দরী।
পলাশ রঙে রাঙালো বনবীথি,
কৃষ্ণচুড়ার রঙে শূন্য সিঁথিতে আলপনা এঁকে দিয়ে প্রণয় রাগিনীতে ভরে তুলতে চায় পত্র-পুষ্প-পল্লবে ভরা আটপৌরে যৌবনে।
নীলাদ্রির গায়ে নীলাভ রঙের আলতো পরশে আকাশের মন ভরিয়ে তোলে,
স্নিগ্ধ পরশটুকু সন্ধ্যাবধি নান্দনিক পরিমণ্ডলে আচ্ছাদিত করে রাখে লাবণ্যময় শোভায়।
দোলের ছন্দমাধুরীতে অপূর্ব ব্যঞ্জনার
রূপ লহরীতে গমকী তোলে,
অনিন্দ্য সুন্দরের পসরা সাজায়
কুহক ডাকা, ফুলে ফুলে ঢাকা বনতলে–
পলাশ রাঙা আলতা পরা বনদেবীর পদতলে।
অনিমেষ রূপ-রস-গন্ধে বিভোর
উতল হাওয়া জানান দিতে চায়–
“আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে”।
প্রকৃতির নৈসর্গিকতা বসন্ত বন্দনায়
চারিদিক আন্দোলিত,
সবুজ কিশলয়ে গজানো নতুন কুঁড়ি কোমল পাপড়িতে পরাগরেণু মেখে বাতাসের গায়ে দোদুল দোলে।
বিরহের অবগুণ্ঠন খুলে দেয়
ফাগুন এসেছে বলে–
হিমেল দিনের আড়ষ্টতা দূরে ঠেলে দখিনা সমীরণ উতল হাওয়ার আহ্বানে বিভোর করে,
বারবার বনবীথি উতলা করে।
কী অপরূপ রূপের বাঁধনে জড়িয়ে
মন ভোলাতে চায় তপোবনের একনিষ্ঠ সাধক!
রূপের আঙিনায় আসা যাওয়ার সঙ -মিতালী খেলায় নানান রূপে-রঙে সাজিয়ে– অবশেষে
একমুঠো প্রেম এনে দিলো।
সে যেন এমনি করে চক্রাকার আবর্তনে মাতাল হাওয়ায় ঘুরপাক খেলে,
মৃদুবায়ের উষ্ণ সহচর্যে ধন্য করে।
প্রকৃতির সাধ জাগে
ফাগুন-চৈতের নিবিড় বন্ধনে প্রকৃতির রূপের হাট বসাতে বড়ই সাধ জাগে!
তবে তাই হোক—তাই হোক,
মিলনমন্ত্রে উজ্জীবিত হোক সুষমা প্রকৃতি,
এমনতর হোক ফাগুনের নব পথচলা,
অজস্র বর্ণিল রূপের মোহনায় এসে
বারবার মিলনের ছবি এঁকে
আসুক বসন্ত, হাসুক প্রকৃতি।
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
পরিচিতি–
কবি সত্যজ্যোতি রুদ্র (সহকারী শিক্ষক), কণ্ঠশিল্পী,গীতিকার ও সুরকার, বাংলাদশেশ বেতার ও টেলিভিশন, চট্টগ্রাম উপজেলা – চকোরিয়া, জেলা- কক্সবাজার।