কোন এক তারাভরা রাতে
-শ্যামল কুমার মিশ্র
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কোন এক তারাভরা রাতে
পুরুষ প্রকৃতিকে বলেছিল–তুমি সুন্দর!
আরক্তিম মুখে চন্দ্রমা খেলা করেছিল
কোন এক তারাভরা রাতে
প্রকৃতি ছিল অপেক্ষমান
দয়িতের প্রতি এক গভীর প্রতীক্ষা যেন
কোন এক তারা ভরা রাতে
উন্মুক্ত ছাদের নরম বিছানায় শুয়ে
আমি খুঁজে ফিরি জননীরে
চন্দ্রমার নরম স্পর্শ হয়ে ঝরে পড়ে
অবসন্ন হৃদয় চকিতে চিৎকার করে ওঠে–
তুমি যেও না মা!
কোন এক তারাভরা রাতে
বাতায়ন পাশে জেগে থাকে দুটি চোখ
মরা জ্যোৎস্নায় দূরে বহুদূরে যদি দেখা যায় ওরে
কোন এক তারাভরা রাতে
হাড়কাঠি গলির তেইশ নম্বর ঘরে
মালতী নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিল
প্রেমিক যুবক ওকে গ্রহণ করেছিল শয্যা পাশে
কোন এক তারাভরা রাতে
সবাই যখন ঘুমের দেশে
শব্দশ্রমিক শব্দ খুঁজে মরে
রাত্রির গভীরে সময়ের ধারাস্রোতে
ধীরে ধীরে ভেসে ওঠে কত মুখ
নবীন সৈকত সাত্তার সাবিনা
চোখের জলে তিন্নি প্রশ্ন করে—
হে শব্দশ্রমিক! এ কোন দেশের ইতিহাস তুমি লিখছো? অভয়ার মাহশার যন্ত্রণার আলেখ্য
আজও উপেক্ষিত স্বাধীনতার পঁচাত্তরে…
কোন এক তারাভরা রাতে
দূর থেকে ভেসে এসেছিল সেই সুর সেই কথা
“খাঁচার ভিতর অচিন পাখি, কেমনে আসে যায়”
অচিন পাখি আজও খুঁজে ফেরে মন
কোন এক তারাভরা রাতে
হয়তো থেমে যাবে জীবনের সব কোলাহল
সন্তর্পণে তুমি এসে কড়া নেড়ে বলবে—
এসে বন্ধু! সময় হলো আজ
কোন এক তারা ভরা রাতে….
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্ত জাহানাবাদে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব।গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে সাম্মানিক করার পর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …