ফিরে এসো কবি
-শ্যামল কুমার মিশ্র
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
স্থির নেত্রে তাকিয়ে রয়েছেন মানুষটি
থেকে থেকে দু’গন্ড বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রুবিন্দু
অচঞ্চল চিত্ত যেন কোথা হারিয়ে যায়
মৌমিতা গেয়ে চলেছে—
‘ফুলেরও জলসায় নীরব কেন কবি’?
হে যুগান্তের কবি!
তোমার বজ্র নির্ঘোষ কণ্ঠস্বর
আজও ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত চতুর্দিকে
দিশাহীন জাতি আজও খুঁজে ফেরে তোমায়
জাতি দাঙ্গায় আজও মানুষ খুন হয়
নেতার উদ্দেশ্যে তোমার দৃপ্ত কন্ঠস্বর যেন ধ্বনিত হয়—
‘হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল,ডুবিছে মানুষ,সন্তান মোর মার’।
হে কবি!
তোমার ভারতবর্ষ আজও এক গভীর অমানিশায়
বদলে যাচ্ছে ইতিহাস
স্কুল পাঠ্য হারিয়ে যাচ্ছে অপবিজ্ঞানের অন্তরালে
লাভ জেহাদে হারিয়ে যাচ্ছে কত কোমল প্রাণ
যমুনার জলে রক্তের হোলি খেলা
এক দুঃসময়ের পারাবারে হালভাঙ্গা তরণীর যাত্রী আমরা কান্ডারীবিহীন তরী আজ বড়ই টালমাটাল…
হে প্রাণের কবি!
আর একবারে এসো ধূমকেতুসম
বাজাও তোমার তূর্য নিনাদ
সে নিনাদে কম্পিত হোক পৃথ্বী
জাগ্রত হোক প্রাণ
নবচেতনায় উদ্বোধিত হোক মানুষ
হে বিদ্রোহী কবি!
তুমি আর একবার গাও তোমার বিদ্রোহের গান ভালোবাসার গান, প্রেমের গান
যে গানে মিশে আছে মন্দির মসজিদ
যে গানে ঝরে পড়ুক আল্লাহর দোয়া, ঈশ্বরের আশীষ
তোমা মাঝে স্পন্দিত হোক নব নব Steps
হে দিনান্তের কবি!
তুমি আর একবার ফিরে এসো
আমাদের চেতনায়, আমাদের মর্মের গভীরে…
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …