ওরা তিন জনে
-শ্যামল কুমার মিশ্র
⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔
আকাশ জুড়ে আজ মেঘ করেছিল।
মেঘের ভেলায় ভেসে একটা রথ এসে নামল তানিয়াদের আঙিনায়
রথের মধ্যে ছিল তিনজন– জগন্নাথ,বলরাম আর সুভদ্রা ওরা এসেছে মাটির আঙ্গিনায়
তানিয়ার সাথে সারাটা দিন কাটিয়ে ফিরে যাবে ঘরে…
কালো মেঘ এসে পিছল করল পথ।
জলভরা চোখ দুটো তুলে তানিয়া বলল–
ও মেঘ, তুমি যাও না আজ ভিন দেশে
আজ আমি খেলব সারাদিন নতুন বন্ধু সনে
নিয়ে যাব ওদের ঈদগাহে, মাখব গায়ে গোলাপের পানি
আনন্দে আর ভালোবাসায় কাটবে সারাদিন…
তানিয়ার ভালোবাসায় ভরে উঠল জগন্নাথের হৃদয়
হারিয়ে গেল দেবত্বের আবরণ
সবুজ মাঠের পথ ধরে জগন্নাথ ধায় ঈদগাহ পানে
পিছে চলে বলরাম সুভদ্রা আর তানি
মহরমের তাজিয়ায় ওঠে জগন্নাথ
বিস্ময়ভরা চোখে তাকায় তিনজনে
তাজিয়া হয়ে উঠেছে রথ
মুরলীধর বাঁশি বাজায় সেথা
কেউ দেখে তাজিয়া কেউ দেখে রথ
দোঁহে মিলে একাকার।
তানিয়ার দু’চোখে জলের ধারা
কৃষ্ণের বাঁশিতে শুনতে পায় ইসরাফিলের গান
ঈদগাহ ছাড়িয়ে রথ এগিয়ে যায় অনেক দূরে
অপরাহ্ণের সূর্যটা তখন ঢলে পড়েছে পশ্চিমাকাশে
ধীরে ধীরে রথটা হারিয়ে যায় আকাশের বুকে…
মায়ের ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙে তানির
‘রথের মেলা যাবিনা মা’
আনমনে তানিয়া বলে ওঠে–
ওরা এসেছিল মা আমায় নিতে
আমার যে যাওয়া হলো না মা…
⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔⇔
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …