মেঘ ফুল আর স্বপ্নের কথা

-শ্যামল কুমার মিশ্র

≅≅≅≅≅≅≅≅≅≅≅

মেঘ আকাশকে বলল–

তুমি পাশে থেকো

তোমার বুক ছুঁয়ে নিরন্তর ভেসে যাওয়া

তুমি যেন আমার সেই অবলম্বন

যাকে ঘিরে আমার উচ্ছ্বাস

যাকে ঘিরে আমার প্রগলভতা

আমার স্বপ্ন ও সম্ভাবনার উদ্ভাস

কাছে থেকো, পাশে থেকো…

ফুল প্রজাপতিকে বলল–পাশে থেকো

আমার ফুটে ওঠা সে তো তোমারই জন্য

আমার সৌরভ সে ও তো তোমারই জন্য

সকালে আমার প্রস্ফুটিত আঁখিপাতে তোমার নিরতিশয় পরশ

সে যে আমার অনন্য এক প্রাপ্তি

গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে তুমি উড়ে যাও আমার প্রেমিকের কাছে

সৃষ্টির বার্তা নিয়ে এক ফুল থেকে আর এক ফুলে

অপেক্ষায় থাকে ফুলফুল…

আবার আসবে কবে

কোন এক প্রাহ্নে বা অপরাহ্ণে

ভালো থেকো, পাশে থেকো…

একবুক স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র ও যায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে

শিক্ষাঙ্গনে পা দিয়ে শত শিখায় জ্বলে ওঠে স্বপ্ন প্রদীপ

বগুলার স্বপ্ন ও একদিন এসেছিল তোমাদের দ্বারে

হাত দুটো ধরে স্বপ্নের পিতা বলেছিল সবাকারে—

পাশে থেকো,কাছে থেকো…

শহরের নিয়ন লাইটের আলোগুলো যখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল

দু’একটা বাইক কিংবা ট্যাক্সি রাতের কলকাতায় শব্দ করে ছুটে চলেছিল

রাত্রির গভীরে স্বপ্ন ও ছুটে চলেছিল এ ঘর থেকে ও-ঘরে

দিকভ্রান্ত উল্কার মতো…

একটু শীতল পরশ কেউ দেয়নি ওরে

একটু স্নেহ চুম্বন এঁকে দেয় নি কেউ

যারা বলেছিল পাশে আছি

হঠাৎ করে সবাই বদলে গিয়েছিল…

কেউ নেই কোথাও নেই

পাশে নেই, কাছে নেই

স্বপ্নেরা হাহাকার করে মরে…

মেঘ আকাশ পেয়েছিল

ফুল প্রজাপতি পেয়েছিল

স্বপ্ন মানুষ পায়নি

তবুও স্বপ্নেরা স্বপ্ন দেখে

মানুষের কাছে বারে বারে ছুটে যায়

স্বপ্নভঙ্গের ইতিহাস তৈরি হয়

এপিটাফ লেখা হয় মানুষের দরবারে

তবুও স্বপ্নেরা স্বপ্ন দেখে…

নীরবে নিভৃতে চাঁদ ডুবে যাওয়ার কালে

কিংবা নতুনদিনের সূর্যোদয়ে…

≅≅≅≅≅≅≅≅≅≅≅

কবি পরিচিতি:

সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*