চাঁদের দেশে

-শ্যামল কুমার মিশ্র

∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼

টিকটিক করে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলেছে

সোৎসাহে চিৎকার করে উঠল ১৪০ কোটি মানুষ–‘বিক্রম’ নামছে

চাঁদের বুকে ‘বিক্রম’ নামল ধীর মন্থর গতিতে

ঘড়িতে তখন সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিট…

ঠাম্মা অবাক চোখে দেখছে আর ভাবছে;

চাঁদের বুড়ির গল্প আবার নতুন করে লেখা হবে

এ এক নতুন ভূখণ্ডের গল্প

যোজন মাইল দূরের চাঁদ আজ শুধুই পড়শি

মানুষ সেখানে প্রাণের খোঁজ করে চলেছে

চাঁদ যেন এসে কানে কানে বলে–

আমি আর একটি ভূখণ্ড

টাইটেনিয়াম,হিলিয়াম-৩ তে ঠাসা

বায়ুহীন এক নতুন ভূভাগ

আমায় চর্চিত করো নব সাজে নব সৃষ্টি সুখে

আজ আমি আর শুধু গল্পকথা আর কল্পকাহিনীর মাঝে বন্দী নই…

হে বিজ্ঞানী! কুর্নিশ তোমার মেধা আর প্রযুক্তিকে

জয় হয়েছে বিজ্ঞানের..জয় হয়েছে বিজ্ঞানীর

কেউ হয়তো দেঁতো হাসি হেসে বলবে–

এ জয় বিজ্ঞানের নয়, এ জয় তিরুপতির

তর্ক হয়তো চলতেই থাকবে

আমি বলব এ জয় শ্রমের, এ জয় নিষ্ঠার, এ জয় মানুষের…

ইসরোর বিজ্ঞানীদের পাখির চোখ শুধুই ‘বিক্রম’

কম্পিউটারের মনিটরে কয়েক জোড়া চোখ

ধীর মন্থর গতিতে শেষ কুড়ি মিনিট

বিক্রম এগিয়ে চলেছে

চন্দ্রযান-১, চন্দ্রযান-২ থেকে বিজ্ঞানীরা শিখেছে

অসাফল্য থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে গেছে সাফল্যের দিকে…

চাঁদ এসেছে দোরগোড়ায়

কল্পনার সেই চাঁদের বুড়ি যেন কোথায় হারিয়ে গেল

কবি ধীরে ধীরে বলে ওঠেন–

চন্দ্রমা, তুমি আমার সব নিলে

প্রেম, ভালোবাসা,আমার অক্ষর

রাত্রিশেষের পেলবতা ছুঁয়ে থাকে আমায়

মরাচাঁদ কি হারিয়ে যাবে সমুদ্রের বালুকাতটে?

জ্যোৎস্নার মূর্ছনা ছোঁবে না আমায়?

হাজারো প্রশ্ন জেগে থাকে…

চন্দ্রযান যেন সুর তুলে বলে যায়–

“আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া

বুকের মাঝে বিশ্ব লোকের পাবি সাড়া”।…

∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼

কবি পরিচিতি:

সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*