বিষণ্ণ সকালে
-শ্যামল কুমার মিশ্র
∼∼∼∼∼∼∼∼
সকালের নরম রোদ্দুর আইসা খেলা করে ইসমাইলের ভাঙ্গা ঘরে
দরমার বেড়া ঠেইল্যা বার হয় ইসমাইল
প্যাঁক প্যাঁক কইরা হাঁসগুলান চইল্যা যায় জলের পানে ইসমাইল হাঁইটতে থাকে নাতনির সনেস…
সূর্যতোরণের সামনে খানিক খাড়ায়
ই-রকম বড় বড় বাড়িগুলান কত রং করছে
রঙে রঙে সাইজা উঠত
রেতের বেলায় আলো ঝলমল করত
এত্ত আলোর নিচে যেন এক গভীর আঁধার
উহাদের ট্যাকা আছে,বাড়ি আছে, গাড়ি আছে
কিন্তু আনন্দ হারাইয়া গ্যাছে
উহারা পরস্পরকে ভালোবাসেনা।
ঘরের আলো কখন যেন আবছা হইয়া গেছে
ভিতরের রং ফিকা হইয়া গেছে
ট্যাকার পাহাড়েও শুইয়া স্বপ্ন দেখে আরো ট্যাকার
বিষণ্ণ মুখগুলানরে দেইখা বড় মায়া হয় ইসমাইলের…
সম্বিত ফিরে নাতনির ডাকে
দুহাতে জড়াইয়া ধরে উহারে
‘আমাগো শান্তি আমার বুকের মাঝে’
টপ টপ কইরা জল ঝরে ইসমাইলের
ছোট্ট দুই হাতে জল মুঝাইয়া নাতনি কয়—
‘তুমি কাঁদ কেন দাদাই..আমি তো আছি’
নাতনির হাত ধইরা আগুইয়া যায় ইসমাইল
ভাঙ্গা ঘরের আঙিনা জুড়ে তখন শালিক খেলা করে…
∼∼∼∼∼∼∼∼
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …