যদি দেখা হয়
-শ্যামল কুমার মিশ্র
∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼
হৃদয় দিয়েছি যারে
সে কি কভু মনে রেখেছে আমারে
কবে কোন নিশীথ বেলা
দেখা হয়েছিল দোঁহে
কোপাইয়ের বাঁকে
মনে রবে কি আমারে?
সেদিন ও উঠেছিল একফালি চাঁদ
রূপোলী জ্যোৎস্নায় ভরে উঠেছিল নদীতট
শ্যাওলা রঙা শাড়িতে সে এসেছিল
চন্দ্রমা ছুঁয়ে ছিল তার অধর
অপূর্ব বিভায় বিভাময়ী হয়ে এসেছিল আমার কাছে
হাতে হাত রেখে হেঁটেছিল ধীরে
স্রোতস্বিনী গতি অভিমুখে…
উপল খন্ডে বসে কেটেছিল অনেকটা সময়
কোপাইয়ের কুলু ধ্বনি বেজে ছিল প্রতিক্ষণে
নীরবতার ভাষা উচ্চারিত ছিল অনুক্ষণ
স্তব্ধতা ভেঙে বলেছিল—
মনে রেখো মুহূর্তটুকু…
আজি এই নিশীথ বেলা
কেটেছিল দোঁহে
যদি আর হয় নাকো দেখা
স্মৃতিটুকু অমলিন রবে…
নীরবে বয়ে যায় নদী
ক্ষীণ তনু লয়ে
সময় ছুঁয়ে যায় দোঁহে
দিগন্ত পারে সূর্য আজো অস্ত যায়
কোপাইয়ের বাঁকে…
ফিরে আর আসে নাকো সে
শ্যাওলা রঙা শাড়ি আর মেলে না যে পাখা
কবে কোন যুবকের প্রথম প্রেম
হয়তো বা হারায়েছে স্রোতস্বিনী মাঝে…
জীবনের স্রোত ভালোবেসে
তবু ফিরে ফিরে আসা
যদি দেখা হয় এমন নিশীথ বেলা
যেথা আমি হারায়েছি ওরে
জীবনের কোন এক বাঁকে…
∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …