(জীবনানন্দ দাশের প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য)
সৃষ্টি খুঁজে ফেরে স্রষ্টারে
-শ্যামল কুমার মিশ্র
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
জ্যোৎস্নামাখা বালুতটে খুঁজেছিলে তারে
শ্রাবস্তীর পথে পথে
কিংবা গাঙ্গুড়ের ঊর্মি মাঝে
খুঁজে ফিরেছিলে তারে
কলেজের গেটে অপেক্ষারত তুমি
খুঁজেছিলে তোমার বনলতারে…
চিরন্তন সে এক খোঁজ
একটুখানি ভালোবাসা তরে
বারে বারে গেছ তুমি প্রেয়সী সনে
প্রত্যাখ্যাত হয়েছে সেখানে
দুর্বল চিত্ত তব খণ্ড-বিখণ্ড হয়েছে বারংবার
একটু স্পর্শ অভিলাষে
কেঁদে ফেরে বিলম্বিত কবি-প্রাণ
প্রেম যেন আঁধারের বুকে
হারায়েছে নীরব অভিমানে…
নীরব অভিমানে তাই কি তুমি খুঁজে নিলে ট্রামের পথ?
ধীরলয়ের গাড়িখানি মাঝে
তুমি কি সঁপেছিলে নিজেরে?
এ কি আত্মাভিমান তব?
প্রেম তবু অধরাই রয়ে গেল
কালের ইতিহাসে তুমি রয়ে গেলে ভীরু কাপুরুষ হয়ে
জানো কবি, তোমার জন্য সমকাল সমব্যথী হয়নি
তোমার কবিতা হলো না সর্বত্রগামী
ভীরু কবি হয়েই রয়ে গেলে
কিন্তু তোমার সৃষ্টি?
নতুন করে মূল্যায়িত হল আগামীর কলমে
তোমায় নিয়ে গবেষণায় সৃষ্টি হলো কত পিএইচডি ধারী কিন্তু এক প্রেমিকের হৃদয়ের আর্তনাদ আজও
কেঁদে কেঁদে ফেরে…
সমকাল নতুন করে বিম্বিত হয় আগামীর দর্পণে
নতুন এক ধারার জন্ম হয় তোমা মাঝে
তোমার বনলতা নব বিভঙ্গে
নব নব রূপে ফিরে আসে
স্রষ্টার যন্ত্রণা কেঁদে মরে যুগ হতে যুগে নীরব অভিমানে অদ্ভুত এক প্রেয়বোধ জন্ম নেয় কালের গভীরে
খুঁজে ফেরে আত্মজনে…
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …