কেন কবিতার আরাধনা
-হাসান জামান
∞∞∞∞∞∞∞∞
জীবনকে খুঁজতে খুঁজতে ইচ্ছে গুলো
উড়ে যাচ্ছে বাতাসে শিমুল তুলার মতো
লাটাই ছেঁড়া ঘুড়ি বড্ডো এলোমেলো!
দীর্ঘশ্বাস আঁচড় কাটে মগজের অস্হি মজ্জায়!
পঞ্জীভুত মেঘ স্তরে স্তরে বৃষ্টি হাওয়ায় ভাসে!
সেই কৈশোর থেকে টিউশন দিয়ে পথ চলা
শুরু! নীল ক্ষেতের বস্তি পেরিয়ে মসজিদের
অলিন্দে বসে দেখেছি আকাশের ছাদ!
তারেক ভাই সংকটে যিনি নিজের টিউশন ছেড়ে দিয়ে বলেছিলেন দু-দুটি গোলাপ দিলাম,
ঘ্রান আছে ফুলে, আছে কাঁটা দিওনা মুখ ভুলে!
মুসাফির শুধু নিজের ঠিকানা রেখো মনে!
আহা, সবার আগে তিনি পৃথিবীর টিউশনি ছেড়ে ফিরে গেছেন আপন ঠিকানায়!
এখন চারবেলা চাকরি করি।বউয়ের ধমক খাই
প্রতিদিন! মানুষের মত মশার কামড়ের কথা ভুলে
যাই -বেমালুম দিনের ব্যস্ততা নিয়ে!
অফিসের একেক জন বস আসেন যেন রাতের অন্ধকার অথবা আলোছায়া!
রোদেপোড়া মুখ! অলরাউন্ডার নই বলে সারাক্ষণ উইকেটে টিকে থাকার প্রাণান্তকর লড়াই!
সত্য মিথ্যা সব কিছু মেনে নেই ইচ্ছা অনিচ্ছায় ।
পদ পদবীর মোহ মানুষের ষোলো আনা! বৃষ্টিতে
মাথায় ছাতা ধরতে পারিনা বলে লোকাল ট্রেনে ঘুরি সীমান্ত শহরের স্টেশনে স্টেশনে!
পোস্টিং প্রোমোশন ঝুলে থাকে লাল ফিতায়!মিথ্যা আশ্বাস আর অবিশ্বাস্য অভিনয়ে!
আর পারি না গুরু! সেই শৈশব থেকে শুরু।
কোথায় দু’পয়সা রোজগার বেশী এ ভাবনা সারাক্ষণ যাদের মাথায় ঘোরে ফ্যানের মত বোঁ বোঁ করে ।
আখের গুছিয়ে ওরা এখন দিব্যি আছে!
দেখা হলে চাকুরীর সবকনামা হাতে ধরিয়ে দেন!
কাস্টমার কেয়ার করতে করতে এখন নিজের কেয়ার ভুলে গেছি ।
চুল দাড়ি নখ কাটার সময় কই!
সেদিন রাস্তায় একজন মুরীদ ব’লেই ফেল্লেন বাবার হাতে বাইয়াত নিলে তোমার এমন দূর্দশা হতো না!
ইচ্ছে গুলো কে শুঁটকি মাছের মত শুকিয়ে শিকেয় রেখেছি তুলে।
অনর্থক রাত জেগে কবিতার আরাধনা কেন করি এ প্রশ্ন আমাকে করোনা!
ভাগ্যিস গিন্নি তোমাকে কামাই রোজগার করতে হয় না – যদিও সংসার খরচ ও বিলি বন্টন তোমার হাতে জিম্মি!
তাই এ্যাতো প্রশ্নমালা ! ঠোটঁ জুড়ে বর্ণমালার খই ফোটে! রোমাঞ্চ থই থই করে নিশি রাতে!
আমার অপ্রাপ্তি নিয়ে কারো কাছে কৈফিয়ত কখনো চাইতে পারিনি! এ লজ্জা কোথায় রাখি!
আমি আমার নিজের পৈত্রিক অধিকার টুকু বুঝে নিতে ও লজ্জা বোধ করি!
শুধু তোমাদের অধিকার পুরনে আপ্রাণ প্রচেষ্টা আমার অনেকটা গাধার মতো!
আমার কবিতা অকপটে সত্য কথা বলতে
পারে না এখনো ! তবু সাংকেতিক ভাষায় আজকের ফেরাউন সম্রাটদের ইতিকথা
পিরামিড পাথরে খোদাই করে রাখে!
প্রাচীন সুরয়ানী কিংবা হিব্রু ভাষায়।
যদি কেউ ব্যর্থতার মনোবেদনা আবিস্কার করে আমার কবিতা প্রেমী আগামী প্রজন্ম!
∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি ঃ
কবি হাসান জামানের প্রকৃত নাম মুহঃ হাসানুজ্জামান। তিনি ১৯৬৭ সালের ০৯ ই জানুয়ারি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোঃ নজরুল ইসলাম ও মাতা মোছাঃ ওলিমা বেগম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে একজন ব্যাংকার। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির সাথে জড়িত। দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইন ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখালেখি করে থাকেন।
কবিতা তুমি কবিকে করেছো মহান, তাইতো কবি করে যায় চেষ্টা আপ্রাণ! রাত জাগা পাখীর মতো।