একুশের আত্মা
-খন্দকার আরশাদুল বারী
∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼
রফিক, শফিউর, বরকত, জব্বার এর নাম তোমরা শুনেছো
শোন নি তাদের আর্ত হাহাকার!
জিন্নাহ্ যেদিন রাষ্ট্রভাষা উর্দু বলেছিল ,
ধীরেন্দ্র বাবুর প্রস্তাবনা লুটিয়ে পড়েছিল ,
সেদিন বাংলা মায়ের বুকের কচকচানি
আর আর্ত চিৎকার তোমরা টের পাওনি।
আমি পেয়েছিলাম, কারণ সেদিন আমি ছিলাম!
স্লোগানের পিঠে সেদিন আমি ছিলাম!
আমি এক বিস্মৃত ভাষা সৈনিক!
পশ্চিমা প্রেমী আর চাটুকারের চাপে ক্ষীণ হয়ে যাওয়া যুবক ।
রক্তে আমার সেদিন উঠেছিল খলখলানি ,
মুখে ছিল বাংলা মায়ের ভালোবাসা,
রাজপথে টগবগে যুবকের বজ্র কঠিন স্লোগানের টানে,
আমি গিয়েছিলাম ফিরিয়ে আনতে আমার মায়ের ভাষা।
আমি ছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে,
তুলেছিলাম দৃঢ় কণ্ঠস্বর !
ছিলাম আমতলীর ভাষণে,
আমি অগ্রদূত ছিলাম বজ্রদীপ্ত ঘোষণার।
আমি আপোষহীন ছিলাম, দাবি আদায়ে সোচ্চার!
আমি এক তেজোদীপ্ত ভাষা শহীদের বজ্রস্বর!
বাংলা ভাষার দাবিতে সেদিন ছিলাম আমি আপোষহীন শনি!
আমি শুধু আমি নই, আমি সেদিনের জাগ্রত জনতার বজ্রধ্বনি।
যে চেতনা লালন করে সেদিন,
ভাষা পাগলরা দিয়েছিল জীবন,
সেই চেতনার মরণ দশা দেখে
স্তম্ভিত আমার উদভ্রান্ত আত্মা; শোকে!
আমি আবার আসবো ফিরে,
অপসংস্কৃতিপ্রেমীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনি হয়ে!
একুশের চেতনা আবার লালিত হবে
সকল বাঙালির হৃদয়ে।
∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼
পরিচিতিঃ
প্রভাষক, পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র।