মা তুমি আর আমি

-হাসান জামান

∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼

মা আমি খুব মনোকষ্টে আছি!

হৃদয়ে বিষাদ সিন্ধু গলে গলে পড়ে

দুখের দেয়ালে বরফের স্রোত

অন্ধকার নেমে আসে শরীরে !

দুখের তসবী দানা আঙুলে ধরে

জায়নামাজে বসে যিনি কাঁদেন

তিনি আমার গর্ভধারীনি মা !

আশার জঠরে তিনি বেঁচে আছেন

আমার হৃদপিন্ডে!

ইদানিং তাঁর মুখ খুব মনে পড়ে।

মনোকষ্ট বাড়তে থাকে

পঞ্চাশ পেরিয়ে আমার মাথা মায়ের কোলে

নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে ।

মা আমার ভিখারি ছিলেন না অথচ অনেক রাত্রি

তাঁকে অভুক্ত দেখেছি। হুজুর বাবা তাকে

শিক্ষা সম্পদ থেকে নিঃস্ব করেন। স্বামীর সম্পদ

স্নেহের ছেলে মেয়েরা বাটোয়ারা করেছে।

ঔষধের অভাবে অনেক আহত রাত কেঁদেছে

তাঁর অব্যক্ত যন্থনায়!

অবহেলা উপেক্ষার সংসারে তিনি ছিলেন পরবাসী!

হৃদয় খুঁড়ে খুঁজতে থাকি মনোবেদনার সেই দুখের নদী

দেখি বারান্দায় হাঁটুমুড়ে কাঁদেন আমার দুঃখীনি মা।

শহর থেকে বাউন্ডেলে ছেলেটা ঈদেও ফেরেনা ঘরে –

মনের জমিন তাঁর খাঁ খাঁ করে বুকে আনন্দ নাই

স্নেহের আগুন ভালোবাসা পুড়ে পুড়ে হয় ছাই!

মা তোমার বাউন্ডেলে ছেলের এখন সব কিছু আছে

বাড়ি গাড়ি বিলাস ব্যাসন শুধু তুমি নাই!

দুহাত ভরে কষ্টের নদী বুকে নিয়ে

তুমি গেছো চলে দূরে অপার আকাশে।

মা আমি খুব মনোকষ্টে আছি!

তোমাকে ছাড়া আমার কোন ঈদ নেই। আনন্দ নেই।

এ দুখের নিবাস ছেড়ে মা তোমার আঙ্গুল ধরে

আগামী ঈদে কোন এক আনন্দ শহরে বেড়াতে যাব!

∼∼∼∼∼∼∼∼∼∼

কবি পরিচিতি ঃ

কবি হাসান জামানের প্রকৃত নাম মুহঃ হাসানুজ্জামান। তিনি ১৯৬৭ সালের ০৯ ই জানুয়ারি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোঃ নজরুল ইসলাম ও মাতা মোছাঃ ওলিমা বেগম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে একজন ব্যাংকার। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির সাথে জড়িত। দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইন ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখালেখি করে থাকেন।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*