একটি দুঃস্বপ্নের রাত
-খন্দকার আরশাদুল বারী
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
২৫ শে মার্চের মধ্যরাত সবে পেরিয়েছে
ঘুমন্ত জনতার উপর অতর্কিত আক্রমণ ;
হতবিহ্বল জনতার থেকে ভেসে আসছে
কান্নার রোল ; দুড়ুম দাড়ুম বুলেটের শব্দে
মুহূর্তেই নিস্তব্ধ হাজারো প্রাণ !
দিকভ্রান্ত মানুষেরা রাস্তা দিয়ে আপ্রাণ ছুটে চলছে,
হানাদারদের গুলির তাণ্ডবে ঝাঁঝরা সমগ্র শহর !
পাকী`দের পাশবিক নির্যাতন যেন নরকের যন্ত্রণাকেও হার মানায় !
বিভীষিকাময় সে রাতের কথা শুনলে আজও শিউরে ওঠে শরীর !
হৃদকম্প থেমে যেতে চায়
চোখে জল চলে আসে নিমেষে !
সামলে উঠে জনগণ অপেক্ষায় থাকে সঠিক দিক নির্দেশনার ।
ওয়্যারলেসে ভেসে আসে শেখ মুজিবের পক্ষে ঘোষণা;
আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ;
শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত একজনও পাক সেনা
এদেশে থাকতে না দেয়ার সংগ্রামী আহ্বান!
এ যেন অন্ধকারে সূর্যের জেগে ওঠা !
ওই অদূরে হাতছানি দিয়ে ডাকছে স্বাধীনতা!
ভয়ার্ত জনগণ জীবন বাজি রেখে
ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ মাতৃকার ডাকে ।
মৃত্যু তখন কেবলই খেলা!
এ যেন এক ভয়ানক নেশা!
অধিকার আদায়ে আপোষহীন,
মুক্তির নেশায় চুড় ;
অশ্রুশূন্য রক্তাক্ত চোখে চেয়ে থাকে জননী ;
নিথর দেহ সব সহস্র দিন, নিদ্রাহীন!
ঢেকে দেয় ঘোর অমানিশা !
হাজারও দুঃস্বপ্ন শেষে উঁকি দেয় ভোর!
লেজ গুটিয়ে বিদায় হয় পাক হানাদার গোষ্ঠী ,
লক্ষ শহীদের জ্বলন্ত আত্মা হয়ে জ্বলে যায় শিখা চিরন্তনী।
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি ঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে বর্তমানে একটি সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। খন্দকার আব্দুল হাই ও সৈয়দা হোসনে আরা এর ৭ সন্তানের মধ্যে পঞ্চম। গ্রামের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ৪নং কুমেদপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আওতাধীন বউলবাড়ি গ্রামে।