এক ফালি চাঁদ

-শ্যামল কুমার মিশ্র

≅≅≅≅≅≅≅≅≅≅

একফালি চাঁদ যখন আকাশে ধরা দেয়

তখন তোমার কথা আরও বেশি মনে হয়,

রমজান শেষে রামিজ চলেছে দরগার পানে

ফজরের নামাজ শেষে মিশে যাবে জনতার ভিড়ে

বিদ্বেষ নয়, ভালবাসার আলিঙ্গনে

বাঁধা পড়বে হাজারো হৃদয়…

টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে

সব ছবি ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় রামিজ

গবাক্ষে ধীরে ধীরে আঁধার নামে

আঁধারের বুকে ভেসে ওঠে এক ফালি চাঁদ

রামিজ গিয়ে বসে উঠোনের পেয়ারাতলায়

চেনা এক আতরের গন্ধ ভেসে আসে

চোখ দুটো খুঁজে ফেরে তাঁরে…

এক ফালি চাঁদ বুকে নিয়ে এসেছিল সে

চাঁদটা ছুঁয়ে রয় গভীর এক ভালোবাসায়

চিত্রার্পিতের মতো তাকিয়ে থাকে রামিজ

বিশ বছর আগের সেই গন্ধ, সেই মুখ, সেই চোখ…

দেওয়ালে টাঙানো ছবিটার দিকে

সজল চোখে তাকায় রামিজ

এমনি এক ঈদের দিনে চলে গেছে দূরে বহুদূরে…

রাত্রি গভীর হয়।

একফালি চাঁদ তখনও আকাশে

সেই চেনা গন্ধ ভেসে আসে

রামিজের চোখে ঘুম নেই

বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে রামিজ

ধীর পায়ে এগিয়ে আসে জননী

কপালে চুমো এঁকে কয়—ঘুমো খোকা,

আমি আছি ওই বাঁকা চাঁদের আড়ালে

তোর হৃদয়ের গভীরে

আতরের গন্ধ মাঝে

পেয়ারাতলায় প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে…

রামিজের চোখে জল নেমে আসে…

≅≅≅≅≅≅≅≅≅≅

কবি পরিচিতি:

সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*