বাবার প্রফুল্ল মুখের আড়ালে
-আবুল হাসমত আলী
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
বাবার প্রফুল্ল মুখ আমি দেখেছি বারে বারে,
সব কাজে আমায় সাহস দিতে দেখেছি তারে।
বাবা বোধহয় বীরপুরুষ ভাবতাম আগে,
বুঝতাম না বাবার কিসে কষ্ট লাগে।
বাবাকে প্রশ্ন করতাম নানান বিষয়ে,
বাবা বলত_ জানতে পারবি সব পড়াশোনা করে।
কোন কিছু চাইলেই বাবা তা এনে দিত,
ভাবতাম কেউ ধনী নয় বাবার মত।
অসুস্থ হলে বাবা আমাকে আশ্বাস দিত,
সঙ্গে সঙ্গে অর্ধেক রোগ আমার বিদায় নিত।
ভয়ের কোন বিষয়ে বাবা সর্বদা সাহস দিত,
তৎক্ষণাৎ সমস্ত ভয় আমার হতো দূরীভূত।
বাবা বিশাল বট বৃক্ষের সমতুল্য,
বাবার আশ্রয়ে কেটেছে আমার সময় অমূল্য।
বড় হওয়ার সাথে সাথে বাবাকে দেখি ভিন্ন রূপে,
বাবা রাত দিন খেটে মরে সংসার চালাতে।
প্রফুল্ল মুখের আড়ালে বাবা চিন্তায় জর্জরিত,
টাকা পয়সা ভিটেমাটি বাবার সব হারিয়ে যাচ্ছে অবিরত।
ধার দেনায় বাবার মাথা যাচ্ছে বিকিয়ে,
সমাজের অনেকে ভূষিত করছে খারাপ বিশেষণে।
বাবার শরীরেও আর নেই কোন জোর,
বাবার চোখেমুখে না বলা কথা বিস্তর।
এখনো বাবা বাবার মতই আমায় দেখে,
কিন্তু ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট তার চোখে মুখে।
আমারও ছেলে আমার উপর খুব ভরসা করে,
তাকে জানতে দিই না আমিও জর্জরিত সমস্যার ভারে।
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি:
আমি, আবুল হাসমত আলী, পিতা- সেখ আতর আলী, মাতা- ইন্নান্নেসা বিবি, ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলায় বাস করি। আমার গ্রামের নাম ‘এরুয়ার’ যেটা ভাতার থানার অন্তর্গত। আমি ১৯৭৪ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করি। আমি প্রকৃতি ভালোবাসি, ভালোবাসি পৃথিবীর মানুষকে ও জীবজগতকে। আমার কাছে ধর্ম মানে মানবিকতা। তাই মানুষের মর্যাদা হানি আমাকে সর্বদা পীড়া দেয়। পৃথিবীর সকল মানুষের সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণ জীবনের আমি কামনা করি।