হুল বিদ্রোহের প্রলয়াগ্নি

-বিজয়া মিশ্র

≈≈≈≈≈≈≈≈

আঠারোশ পঞ্চান্ন সালের তিরিশে জুন ঘটেছিল সেই বিদ্রোহ,

পরাধীন ভারতের প্রথম সশস্ত্র সংগ্ৰাম ছিল অত্যন্ত অর্থবহ।

বিহার ঝাড়খণ্ড পুরুলিয়ার জঙ্গল অধ্যুষিত অঞ্চলে

আজন্মকাল অন্ত্যজ মানুষেরা থাকতো হেঁসে খেলে।

সহসা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর জবর দখল শুরু হল

মহাজন জোতদার ও তাঁদের নানা শোষণ চালালো।

রক্তচোষা ব্রিটিশেরা সৃষ্টি করলো খাজনার ত্রাস।

অত্যাচারিত জনজীবনে তখন প্রতিমুহূর্তে নাভিশ্বাস।

মূল জনগোষ্ঠীর জীবনযাপনে নানারকম বিধি নিষেধে

ওদের আজন্মের অধিকার কাড়লো নিষেধাজ্ঞায় বেঁধে।

অসহনীয় জীবন বাঁচাতে ক্রোধে একজোটে উঠলো ফুঁসে,

ওরা অসমসাহসী পরিশ্রমী স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে ।

জন্মভূমি জঙ্গল আগলাতে রণকৌশল করলো স্থির

ভাগনাডিহির মাঠে জড়ো হলো হাতে সড়কি ধনুক তীর।

গর্জে উঠলো মুখোমুখি লাড়াইয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে

প্রচন্ড বিদ্রোহের সেই ঝাঁঝ প্রতিরোধ ছিল না কারো সাধ্যে।

সিধু কানু বিরসা চাঁদ ভৈরব ঝানু আর ফুলমণি

সপরিবারে হুল বিদ্রোহে ওঁরা জ্বালিয়েছেন প্রলয়াগ্নি ।

≈≈≈≈≈≈≈≈

কবি পরিচিতি:

বিজয়া মিশ্র পাহাড়ী র জন্ম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উত্তর কোটবাড় গ্ৰামে।পিতা স্বর্গীয় মুক্তিপদ পাহাড়ী ,মাতা স্বর্গীয়া মাধবীলতা পাহাড়ী।প্রকৃতির শ্যামলিমায় গ্ৰাম্য পরিবেশের মুক্ত হাওয়ায় আশৈশব লালিত। বর্তমানে কলকাতাবাসী ।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষায় স্নাতকোত্তর। লেখালেখি,আবৃত্তি,বক্তৃতা, সঞ্চালনা,লেখালেখির সূত্রপাত বিদ্যালয় জীবন থেকেই,শিক্ষিকাগণের উৎসাহে।চরম দারিদ্রের মধ্যেও সব বাধা টপকে যাওয়ার অদম্য স্পৃহা আশৈশব পায়ের তলায় মাটি খুঁজে নিতে সাহায্য করেছে। বাংলা ভাষা ছড়াও চিকিৎসা বিষয়ক একটি শাখায় স্নাতক হিসেবে শিক্ষা সম্পূর্ণ ক’রে দীর্ঘদিন চিকিৎসা বিষয়ক শিক্ষকতা,পরে স্কুল শিক্ষায় যোগদান -সব মিলিয়ে বৈচিত্র্যময় পথচলা ভাবনার রসদ যুগিয়েছে,যুগিয়ে চলেছে।প্রাত্যহিক জীবনযাত্রাই কবির কবিতা,গল্প ও অন্যন্য লেখার উপজীব্য। নমস্কার, ধন্যবাদ।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*