অভিমান
-শ্যামল কুমার মিশ্র
∞∞∞∞∞∞∞∞∞
ঠোঁট ফুলিয়ে সে আমার কাছে এসে দাঁড়ায়
মুখটা পেছন ফিরে আমার দিকে হাতটা বাড়িয়ে বলে ওঠে–
আড়ি, আড়ি, আড়ি। তোমার সঙ্গে আড়ি।
কলমটা থেমে যায়
আমি দুহাত বাড়িয়ে ওকে জড়িয়ে ধরি
অভিমানাহত মুখটাকে আমার দিকে ফেরাই
বৃষ্টির দুচোখে তখন গাঢ় আঁধার…
তুমি দুষ্টু, তুমি বলেছিলে–
আমায় রোদ্দুর করে দেবে!
সারা সকাল বসে রইলুম
আকাশ জুড়ে আঁধার নামল
বৃষ্টিতে উঠোন ভরে উঠল
বৃষ্টির দুচোখেও বৃষ্টি নামল।
মাকে বললুম–আমার রোদ্দুর হওয়া হলো না।
শব্দশ্রমিকের শব্দ হারিয়ে যায়
বৃষ্টির ঠোঁটে আলতো চুমো এঁকে বলল–
আমি তোমায় হারাতে চাই না মা
তুমি রোদ্দুর হলে আমার বৃষ্টি যে হারিয়ে যাবে
আমি বৃষ্টি স্নাত হতে চাই
আমার বৃষ্টি আমার হৃদয় জুড়ে ঝরবে
আর ঘুম পাড়ানি গান গাইবে
আমি বৃষ্টির কোলে মাথা রেখে হারিয়ে যাব।
দুবাহুর ডোরে বাঁধা পড়ে শব্দশ্রমিক
‘আমি রোদ্দুর হবো না বাবা
আমি তোমার বৃষ্টি হয়েই রইলুম’
আকাশ জুড়ে তখন ঘন বারিধারা
বৃষ্টি মুখ লুকায় স্রষ্টার বুকে…
∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ …