দুষ্ট ক্ষত
-মীর সেকান্দার আলী খোকা
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
লড়ায়ের এক নাম বেঁচে থাকা,
বেঁচে থাকার আরেক নাম লড়াই।
লড়াই ছাড়া পূর্ণ হয় না জীবন,
দেশমাতৃকা খুঁজি আমি ও আমরা।
জীবনের স্রোত বয়ে চলে, বকুল-গোলাপ ডিঙিয়ে,
কৃষ্ণচূড়া ছুঁয়ে কখনো সে সুখ ঝরে পড়ে মৃত্যু উপত্যকায়।
বেলাভূমিতে সূর্যাস্ত দেখি, দেখি স্বপ্নগুলো ডুবে যেতে,
দেখি,বে’রশিক হাঁসি দেয় দুষ্ট ক্ষত।
এমন উল্লাস অযাচিত, নিরর্থক নয়,
অর্থের মাঝে ভাসে আমার ডুবে যাওয়া।
সে ডুবে যাওয়া আমাকে নিরাশ করে না,
বোঝে না দুষ্ট ক্ষত।
আমাকে শঙ্কিত থেকে সঞ্চিত করে,
করে তোলে দাবানল,
সুযোগ করে দেয় বিস্ফোরিত হবার।
আমি যোদ্ধা,
শেকড় থেকে হাজার বছর হেঁটেছি পথ,
পথে পথে যুদ্ধ করেছি, করছি, করব নিরন্তর।
সূর্য যেখানে ডোবে দু’হাত ভাসিয়ে সূর্যকে
উঁচু করে ধরে রাখি আমি,
তাই সূর্য ওঠে প্রতিদিন।
কি হয়েছে আমার ? কি হারিয়েছি আমি! রং বদলে চিনেছি সময়কে,বুঝেছি সময়কে নতুন করে।
চিনেছি তোমার পদাঙ্গুলি থেকে নাসিকা,
চিনেছি তোমার চক্ষুদয়ের বিষাক্ত ক্ষুধা,
যা মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে আসে চোখে।
প্রভাত পাবে না তোমার ও চোখের চাওয়া,
চাহনিতে বিষ ঢেলে দেব, তড়পাবে।
ঈশা খাঁ, ঈশা খাঁ থেকে ১৭৫৭,
১৭৫৭ থেকে ১৯৭১ হয়ে আজও দাঁড়িয়ে শেখরের ছায়া।
বিষাদময় ২৪,
বানভাসিতে ভেসে গেছে খোকা, ভেসেছে প্রিয়তমা,
ভেসে গেছে মা, ভেসে গেছে বাবা নামের বট বৃক্ষটি।
অসহায় সহায় সম্বলহীন আত্মনাদ ভাসে কানে,
লাশ ভাসে স্রোতে, সাঁতরে টেনে আনে ইতর প্রাণী (কুকুর) কিনারায়।
দুগ্ধশিশু হারিয়ে পিতা মাতা হারিয়েছে ঠিকানা,
অর্ধ প্রাণে ভেসেছে পাতিলে ঈশ্বর ভরসায়।
স্রোতে গাছের গুড়ি ধরে চিৎকারে শিশু,চেয়ে থাকে করুণ চোখে হতবিহ্বল।
দেখেছে বিশ্ব অপলক, কেঁদেছে অঝরে,
কাঁদেনি ফারাক্কা,কাঁদেনি তিস্তা, কাঁদেনি টিপাই মুখ,কাঁদেনি ডম্বুর বাঁধ।
দুষ্ট ক্ষতের বিরল প্রতীক এই বাঁধগুলো,
ক্ষত, হত, নিঃস্ব-অসহায় করে চব্বিশের স্মৃতি হয়ে
থেকে গেলে ঘৃণাভরে মনের জানালায়।
আমি হতাশ নই, গর্জে উঠবো আবার,
শুধু তুমি থেকে গেলে রণ বন্যা হয়ে দুষ্ট ক্ষতের
স্মৃতির ঘৃণিত জানালায়।
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি:
জন্ম: ১৫ ই জুন ১৯৬৬ ইং, জেলা শহর রাজশাহী, ছোট সময় থেকেই লেখালেখিতে অভ্যস্ত, বর্তমানে কবিতার পতাতে নিয়মিত লিখছি, এছাড়াও অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা, পটুয়াখালী দুমকি সাহিত্য পত্রিকা, খেয়া, আন্তর্জাতিক দায়িত্ব বার্তা বাংলাদেশ,
কবিতা সাহিত্য গ্রুপে মাঝেমধ্যে লিখে থাকি। পূর্বে যে পত্রিকাগুলোতে কবিতা প্রকাশিত হয়েছে:—দৈনিক সানশাইন রাজশাহী, দৈনিক উত্তরা, সংজ্ঞা, দিনাজপুর, সাপ্তাহিক জনরব ঠাকুরগাঁও, মাসিক ম্যাগাজিন একদিন প্রতিদিন ঢাকা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হতো। বর্তমান স্থায়ী নিবাস: জেলা সদর ঠাকুরগাঁও।