শ্বাপদের চারণভূমি
-বিজয়া মিশ্র
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
উন্নয়নের জোয়ার নাকি এসেছে চতুর্দিকে
আমি তো দেখছি আঁধারে তলিয়ে যাচ্ছে দেশের মাটি,
আমি তো উচ্চারণে নিজের কথাটি বলতে দ্বিধায়
শতবার ভাবি উগরে দেওয়ার আগে যা কিছু খাঁটি।
আমি তো পা ফেলতে গিয়েও থমকে দাঁড়াই রোজ
আমি তো ন্যায়ের হাতিয়ার নিয়েও বিপন্ন বারবার ,
রুটি রুজিতেও আত্নসমর্পণের নিত্য আহ্বান
চোরা চাহনিতে অন্যায্য ইঙ্গিত রুখে দেয় অধিকার।
এক প্রজন্ম আগলে রাখতে চাইছে শুভবুদ্ধি
রোজ নতুনত্বের নানান পসরা বানাচ্ছে চোরাগলি ,
দিশাহারা ন্যায় শুভবোধ আর সংস্কৃতির বাঁধন
সংকীর্ণতা ক্ষুদ্র স্বার্থে চালাচ্ছে দলাদলি।
কিছু প্রাণী দেখতে শুনতে পুরো মানুষেরই মতো
মুখের আওয়াজেও হঠাৎ কখনো তেমনই উচ্চারণ,
কারো কারো ক্ষেত্রে এরা নিত্য নূতন দুঃসময়
ঠাণ্ডা মাথায় নির্বিকার সহসা ঘটায় দূষণ।
চতুর্দিকে ঘুরছে ফিরছে মানুষ নামের শ্বাপদ
নিঃশব্দে বাড়বাড়ন্ত তাদের পদচারণা,
যাদের থাবার তলায় পিষ্ট হচ্ছে সুস্থ্য সমাজধারা
অসতর্কতায় ধংস করবে শ্বাপদের প্রতারণা।
এমন মানুষে ছেয়ে গেছে সমাজের প্রতি কোন
বড়ো ক্লিষ্ট সকল শ্রেণী এদের হাতের জাদুতে,
বিশ্বাস ভাঙে নিঃস্ব করে নীরবে নিভৃতে পলকে
সব নাট্যশালার চরিত্র যেন ন্যায়েরই বিপরীতে।
মুক্তি পেতে সতর্কতায় শিরদাঁড়া থাক সোজা
চোখ কান খোলা রাখতেই হবে রুখতে শ্বাপদদের,
মত্যু তো একদিন আসবেই তার আগে চোখে চোখ
রেখে প্রতিবদী প্রদীপ্ত শিখা জ্বালাবোই সত্যের।
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি-
বিজয়া মিশ্র পাহাড়ী র জন্ম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উত্তর কোটবাড় গ্ৰামে।পিতা স্বর্গীয় মুক্তিপদ পাহাড়ী ,মাতা স্বর্গীয়া মাধবীলতা পাহাড়ী।প্রকৃতির শ্যামলিমায় গ্ৰাম্য পরিবেশের মুক্ত হাওয়ায় আশৈশব লালিত। বর্তমানে কলকাতাবাসী ।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষায় স্নাতকোত্তর। লেখালেখি,আবৃত্তি,বক্তৃতা, সঞ্চালনা,লেখালেখির সূত্রপাত বিদ্যালয় জীবন থেকেই,শিক্ষিকাগণের উৎসাহে।চরম দারিদ্রের মধ্যেও সব বাধা টপকে যাওয়ার অদম্য স্পৃহা আশৈশব পায়ের তলায় মাটি খুঁজে নিতে সাহায্য করেছে। বাংলা ভাষা ছড়াও চিকিৎসা বিষয়ক একটি শাখায় স্নাতক হিসেবে শিক্ষা সম্পূর্ণ ক’রে দীর্ঘদিন চিকিৎসা বিষয়ক শিক্ষকতা,পরে স্কুল শিক্ষায় যোগদান -সব মিলিয়ে বৈচিত্র্যময় পথচলা ভাবনার রসদ যুগিয়েছে,যুগিয়ে চলেছে।প্রাত্যহিক জীবনযাত্রাই কবির কবিতা,গল্প ও অন্যন্য লেখার উপজীব্য। নমস্কার, ধন্যবাদ।