শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয় স্মরণে
-বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল
≈≈≈≈≈≈≈
অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎ বাবূ , তোমার জন্মদিনে
দুখভরা জীবন কাহিনী স্মরণে , চক্ষু কোণে অশ্রু আনে।
১৫ ই সেপ্টেম্বর শুভ দিনে , ১৮৭৬ সালে পিতৃদেবের মাতুলালয়ে
হুগলির দেবানন্দপুর গণ্ড গ্রামে, জন্ম লয়ে ভূমি ধন্য করলে।
অনিলা , শরৎ , প্রভাস, প্রকাশ, সুশীলা ভাই বোন পাঁচ জনা
যদিও পিতৃকুলের তব ঠিকানা, মামুদপুর চব্বিশ পরগনা ।
পিতা মোতিলাল, মাতা ভূবণমোহিনীর কোলে জন্মনিলে
ছেলেবেলায় ছিলে ঘরে দোরে ‘ন্যাড়া’ ডাক নামের আড়ালে।
নানান স্থানে ঘুরে ফিরে, দারিদ্রতার কারণে – অন্নসংস্থানে
এফ. এ পরীক্ষা দেওয়া আর ভাগ্যে জোটে না জেনে ,
ভাগলপুরের আদম পুরের, এক ক্লাবের ছেলেদের দলে
খেলাধুলা আর অভিনয় করে দিন গুলো যে কাটালে।
বিদ্যালয় জীবনে চলার পথে গল্পে ‘ ব্রহ্মদৈত্য ‘ ও ‘কাশিনাথ’
বিভূতি ভূষণ ভট্ট মহাশয়ের সাহিত্য সভার প্রেরণায় লিখলে
উপন্যাসে ‘, বড়দিদি ‘, ‘ দেবদাস ‘, ‘ শুভদা ‘ ও ‘ চন্দ্রনাথ ‘।
‘ হরিচরণ ‘, ‘ অনুপমার প্রেম ‘, ‘ আলোছায়া ‘ ও ‘ বোঝা ‘
গল্প গুলি লিখে সাহিত্য দরবারে উপহার স্বরূপ দিলে।
পিতার অভিমানে, সন্ন্যাসীর বেসে, বাড়ি ছেড়ে দিনযাপন
বাড়ি ফেরে মৃত পিতার যথাবিহিত করলে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান।
কোলকাতার লালমোহন বাবুর বাড়িতে থাকার কালে
‘ মন্দির ‘ গল্পের জন্য ‘ কুন্তলীন ‘ পুরস্কারে ভূষিত হলে।
প্রথমা স্ত্রী শান্তি দেবী, দিতে পারেনি তব শান্তি দান
মোক্ষদা বা হিরন্ময়ীর পাণি গ্রহনেও হোল না কোন সন্তান,
কর্ম সূত্রে নানা পরিবর্তন, ‘রেঙ্গুন’ শহর থেকে ‘পেগু’ আগমন।
মধ্যবয়সে পানিত্রাস – সামতাবেড়, রূপনারায়ণ কূলে নিবাস
উপহার দিলে একাধিক গল্প, প্রবন্ধ, নাটক ও উপন্যাস।
তব লেখনীর আধারে পঞ্চাশটিরও বেশি চলচ্চিত্রায়িত,
পাঠক দিয়েছে অমরত্ব, ১৯২৩ সালে ‘ জগত্তারিণী ‘ পদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দিলে সান্মানিক ‘ ডিলিট ‘উপাধি।
দুরারোগ্য যকৃত ক্যান্সার রোগে, ৬১ বৎসর বয়স কালে
১৬ ই জানুয়ারি ১৯৩৮ এ, অমর ধামে যাত্রা যে করলে।
≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি-
নব প্রজন্মের কবি শ্রী বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল ( পিতা শ্রী যুত্ বাদল মণ্ডল ও মাতা শ্রীমতী শীতলা দেবী ) মহাশয়ের জন্ম পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুর থানার অন্তর্গত গদীবেড়ো নৈসর্গিক গ্রামে।
গ্রামের পটভূমিতে রচিত হয়েছে প্রকৃতি প্রেমী বিভূতি ভূষন বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের অতি প্রাকৃত গল্প ‘ রঙ্কিনী দেবীর খড়গ ‘।
কবি পেশায় শিক্ষক ও নেশায় বাগান প্রেমী । তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লকের অন্তর্গত পরমানন্দপুর রমানাথ বিদ্যাপীঠ এর সহকারী শিক্ষক পদে নিযুক্ত রয়েছেন।
শ্রী শ্রী রামচন্দ্র আর্দশ বিদ্যালয়, গদীবেড়ো থেকে পড়াশোনার সাথে সাথে বিদ্যালয় পত্রিকা ‘ ধ্রুব তারা ‘ য় প্রথম ছাপার অক্ষরে লেখা প্রকাশিত হয়।
একক কাব্য গ্রন্থ ‘ অনুভব ‘ ‘ অনুরণন ’ ও ‘অপরাহ্নের প্রেয়সী ‘ ( পঞ্চবান শৈলীতে ) , ‘ অনুরাগ ‘ ( হাইকু শৈলীতে ) , ‘ অনুভূতি ‘ ( বত্রিশা অণু গদ্য কবিতা শৈলীতে ) , ‘ অনুভা ‘ ( অনুভাষ শৈলীতে ) প্রকাশিত হয়েছে । রাজ্য দেশ তথা আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলা সাহিত্য সাধনায় ব্যাপ্ত রয়েছেন।
রুক্ষ মাটির ঊষরতা কবিকে করেছে আত্মপ্রত্যয়ী, মধ্যবয়সে এসে জীবন বোধে স্থিতপ্রাজ্ঞ হয়ে জীবন সম্পর্কে কবির বহুবর্ণীল অনুভূতি মালা সদ্য প্রকাশ পেয়েছে ” অনুভাবিত ” বিশেষ কবিতা সংকলনে।