স্বপ্নকল্প

বি, এইচ মন্ডল

⇔⇔⇔⇔⇔

আমি সেইখানে যাবো –

যেখানে দুঃখ গুলো রঙ হয়ে মিশে যায়

আকাশ নীলে,

যেখানে গেলে শরীরের ক্লান্ত সব

শিশির হয়ে ঝরে যাবে ।

যেখানে দূর্বা ঘাসের ডগায় ইচ্ছে গুলো ঘুমিয়ে যাবে

নবান্নের শূন্যতায় ।

যেখানে ভোরের শিশির কণায়

সূর্যের আলো রঙধনু আঁকে,

আমি সেইখানে যাবো

সেই বাঁধাহীন দিগন্ত পাড়ের নীলাভ সীমায়।

যেখানে রাতে জোনাকিরা আলো জ্বেলে,

ভাঙা বেড়ার ফাঁকে পুষ্প হয়ে ফোটে ।

যেখানে মানুষ চোখের নদীতে ভেসেও

সাম্যের কথা বলে।

যেখানে মানুষ মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ ,

করে তোলে, তিমির নিশীথে ।

সেইখানে যাবো হাজার পথ পেরিয়ে

মানবতার সন্ধানে, মাটি জল ধুলি

কাদা পাঁক গায়ে মেখে।

যেখানে পাখিরা গান গেয়ে ভাঙে বিনিদ্রিত রাত,

যেখানে রাখাল মেঠো পথ ধরে

ভরায় মন প্রাণ ভেঁপুর কলতানে ।

মন হারা সেই রাঙামাটির পথপাশের

শীতল ছায়াতলে বসতে ক্লান্ত দেহে ।

আমি সেখানেই যাবো –

দুঃখের নদীতে যারা নিয়ত সাঁতার কেটে

জীবন নদী করে পাড়,

সেখানে যাবো পুষ্পের হাসিতে দুরন্ত বসন্ত হয়ে ।

যেখানে রোদে জলে ভিজে ফলায় শ্যামল ফসল

ঘামের জলেতে করে চাষ।

যেখানে সবুজ পাতার ছাউনিতে বাঁধে নীড়

অসহায় নীড়হারা পাখি,

যেখানে রঙধনুর রঙ তুলিতে লেখা হয়

জীবনমুখীর গান ।

যায় হিংস্রতা ভুলে প্রেম বন্ধনে বেঁধে নীতিহীন

মন, আমি যাবো সেখানেই ।

যেখানে মানুষ করে ন্যায় আদর্শের চাষ,

ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলে সকল জাতপাতে ।

যেখানে সবুজ বৃক্ষ লতা বাড়ে একসাথে ।

আমি সেইখানে যাবো –

যেখানে চাঁদের জ্যোৎস্নায় কেটে সাঁতার,

অসংখ্য দুরন্ত পরিযায়ী পাখি,

সাম্যের গান গায় হিজল বটের ছা’য়ে।

যেখানে মাতৃ কোলে জাগ্রত হয় সন্তান,

পুষ্পের হাসি হেসে

যেখানে আঁধারে প্রদীপ জ্বলে

দুর্নীতি সংশয়কে পদতলে রেখে ।

মানবিক মূল্যবোধ যেখানে নিয়ত হাতছানি দেয়,

আগামীর আয়োজনে ।

মুক্ত প্রাণে বেঁচে থাকার চিরন্তন আশ্বাসে ।

আমি সেখানেই যাবো

যেখানে বাদশা ফকির সমবেত কন্ঠে গায় ,

জীবন মুখী গান

তৃন লতা বৃক্ষ শাখায় যেখানে জড়িয়ে ধরে

ক্ষিপ্ত প্রেমিক প্রাণ।

যেখানে দুঃখ গুলো সুখের চাপে দূরে সরে যায়,

যেখানে রাত নিশীথে চলতে পথে ভয় থাকে মনে ।

ধানের শীষে ভোরের শিশির যেথা দোল খায়

বাতাস বেগে যেখানে স্বপ্ন গুলো ভেসে বেড়ায়

আমি সেখানেই, সেখানেই যাবো ।

কৃষক জেলে মুচি মেথর শ্যামল মাটির বুকে

করে মানবতার চাষ ।

যেখানে পুকুর পাড়ে বটের শাখায়

পাখিরা বেড়ায় নেচে।

যেখানে সাম্যবাদী পুঁজিবাদীর অবাধ চলাচলে,

প্রেম বাঁধনে আঁধার পথ হয় আলোকিত ।

যেখানে স্বার্থ টাকার জোড়ে নয় কেউ নেতা ধর্ষক,

যেখানে সবার স্বাধীন সত্ত্বা মুক্ত অনির্বাণ ।

আমি সেখানেই যাবো –

যেখানে মানবের মনুষ্যত্বই হবে মহীয়ান ।

যেখানে সবাই যুক্তিতে কথা বলে

ধর্মকে রেখে সম্মুখে ।

যেখানে সবুজের সমারোহে মানুষ মাটির কথা কয়,

যেখানে ” মানুষ মানুষের সুখে দুঃখে “

মিলেমিশে যেনো মিশে রয়।

⇔⇔⇔⇔⇔

কবি পরিচিতি- কবি বি,এইচ মন্ডল পুরো নাম (বাবর হোসাইন মন্ডল) জন্ম ১৯৯২ সালের ১৫ই জানুয়ারি । পিতা হাসান আলি মন্ডল ও মাতার নাম জাহানারা বিবি । বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার পলাশী পাড়া থানার অন্তর্গত বড়নলদহ গ্রামে । তিনি একজন প্রাকৃতিক, সামাজিক ও রোমান্টিক কবি ।তাহার উল্লেখযোগ্য কাব্য গুলো হলো- নিশীথিনী সেই তুমি, যে নদী আজো কাঁদে, বেলা অবেলার কান্না, বেলা শেষের আর্তনাদ, ছিন্ন পান্ডুলিপি এবং নাটক ভাই তখন শত্রু, রক্তে ভেজা মাটির আঁচল প্রভৃতি ।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*