
স্বাধীনতা কারে কয়
-শ্যামল কুমার মিশ্র
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
সকাল থাইক্কা সবার মুখে শুনতাছে
স্বাধীনতা স্বাধীনতা…
লক্ষ্মীরানি বুইঝা উঠতে পারতাছে না
স্বাধীনতা কারে কয়…
আর পাঁচটা দিনের মতো
আজও লক্ষ্মীকে কামে যাইতে হইব
ইটভাটায় কুলি কামিনের কাজ
সারাদিন মাথায় কইরা ইট বইতে হইব
ম্যানেজারের গালিগালাজ
ডবকা মাইয়া লতার প্রতি উহার খারাপ ইঙ্গিত
এইসবই কি ১৫ ই আগস্ট?
উত্তর জানা নেই লক্ষ্মীর
শুধু ভাবে– স্বাধীনতা কারে কয়!
লক্ষ্মীর মন খারাপ হইয়া যায়
গতকাল পাড়ার সব মাইয়ার সঙ্গে
ও ও গিয়াছিল রাত দখলে
ডাক্তার মাইয়াটার জন্য আজও মন কেমন করে লক্ষ্মীর
একটা বছর চইলা গেল
বিচার আর হইল না
ই পুড়া দ্যাশে কুন বিচার নাই
লক্ষ্মী বাবুরে জিগায়–স্বাধীনতা কারে কয়?
লক্ষ্মী এখন শুধু দিনগুজরানের স্বপ্ন দেখে
বারে বারে মনে হয় এ কেমন দিন আইল
মাইয়া লোকের সম্মান নাই
একি শুধুই দুর্যোধন দুঃশাসনের দিন
উত্তর জানা নাই লক্ষ্মীর
ইস্কুল ফেরত মাইয়াটারে জিগায়–
জানো মা–স্বাধীনতা কারে কয়?
দিন বাইড়তে থাকে
লক্ষ্মীর আজ আর কামে যাওনের মন নাই
বল খেলার মাঠে পতাকাটার দিকে তাকাইয়া রয়
পতাকাটা উইড়ছে, পত পত কইরা উইড়তাছে
হঠাৎ যেন উহা তার নাতিন হইয়া গেল
ঠাম্মার গলা জড়াইয়া কয়–
স্বাধীনতা আর খুঁইজ না ঠাম্মা
স্বাধীনতা হারাইয়াছে সেই কবে কোন এক ভোরে
হয়তো সেটা কোন এক পনের…
∞∞∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি:
সাহিত্যকে ভালোবেসে কিছু লেখার চেষ্টা। কখনো তার প্রকাশ কবিতা, অণুগল্প কিংবা প্রবন্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রত্যন্ত প্রান্তে আমার জন্ম। গ্রামবাংলার মেঠোপথে কেটেছে শৈশব। তারপর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। লেখার অভ্যাস সেই ছোটবেলা থেকে। রামকৃষ্ণ মিশনে তা এক ভিন্ন মাত্রা পায়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। বিদ্যাসাগর রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় দুবার বিদ্যাসাগরের দৌহিত্র শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার অধিকারীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। শিক্ষকতাকে ভালোবেসে প্রায় ৩৪ টা বছর কেটে গেছে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে অন্যতম প্রাপ্তি “দ্রোণাচার্য্য” পুরস্কার। ভালো লাগে পড়তে, লিখতে আর মানুষের মাঝে সময় কাটাতে। আর তাই সৃষ্টি “মনীষী চর্চা কেন্দ্রের” যা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক মনন গড়ে তুলতে সদা সচেষ্ট। সাহিত্যের মাঝে বুক ভরে শ্বাস নেওয়াতেই আমার আনন্দ