
নিশ বরণ
-রাজীব কুমার দাস
∞∞∞∞∞∞∞∞
নিশাচরের বুক চিরে জেগেছিল এক অচেনা অনুভব,
চাঁদের আলোয় নিঃশব্দে মিশেছিল ঘুম ভাঙার দল।
তারার দেশে কে যেন কাঁদে বিনিদ্র একাকীত্বে,
সময়ের ঘড়িতে অব্যক্ত বিষাদের সুর কোনো অভিমানী ছল।
রাতজাগা নদী বয়ে আনে স্মৃতির ছায়াপথ
পথের আঁকাবাঁকা অতীত ভেসে আসে ঢেউয়ের বঞ্চনায়,
নিঃসঙ্গ পাখির ডাক যেন কোন কালের শোকগাথা
আকাশ-পাতাল জুড়ে জেগে ওঠে এক গোপন প্রার্থনায়।
নিশিকর রয়েছে থেমে—শুধু শোনে, বলে না কিছুই
হৃদয়ের অতল থেকে উঠে আসে নীরব ধ্বনি,
এই নিশিক্ত রজনী—ভাঙা স্বপ্নের নিঃশেষ ভাষ্য
অন্ধকারেই লেখা রয়, জীবনের মৌন পটভূমি।
চাঁদের মুখে ক্লান্তি, জোছনায় মিশে বিষণ্ণতা
জীবন যেন থমকে দাঁড়ায় ক্ষণিকের মোহভঙ্গতা,
দূরের বনভূমি থেকে ওঠে মৃদু নি:শ্বাস,
যেন কারো ফেলে আসা ব্যথা—নীরব, নিস্প্রকাশ।
এক ঘুমহীন শহর আর খোলা বাতায়ন
হৃদয়ের অজানা কাঁপন লুকায় অন্ধকার বেশে,
স্মৃতিরা ধীর পায়ে নামে কুয়াশার চাদরে
ব্যর্থতার কুহক মিশে ভাঙা স্বপ্নের দেশে।
এ রজনী এক কালের সাক্ষী—এক জিজ্ঞাসার প্রহর,
যেখানে শব্দেরা মৃত, অনুভূতিগুলো দহনে মলিন
ভোরের প্রতীক্ষায় জ্বলে মিটিমিটি ক্লান্ত পিদিম,
নিভে যাওয়ার আগে জানায়—নিশিক্ত রজনীর গহীন।
∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি-
জন্ম ৩১ ডিসেম্বর এক মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবারে। বাবা সরকারী চাকুরে এবং মা ছিলেন গৃহিনী। শৈশবে মায়ের হাতেই হতেখড়ি তারপর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের পথ পেড়িয়ে রসায়নে সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। পড়াশোনা শেষ করতেই একটি স্কুল এন্ড কলেজে পার্টটাইম (রসায়ন)শিক্ষকতা করেন এবং পরবর্তীতে এমবিএ (ফিন্যান্স) ডিগ্রি লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার পাশাপাশি বই পড়া ছিল অন্যান্য শখগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০১০ এ একজন সরকারী চাকুরে হিসেবে নিজেকে স্থীর করেন এবং কবিতা ও অনুগল্প নিয়ে লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত হন। সম্প্রতি বইমেলা-২০২৩ ও ২০২৪ এ প্রকাশিত হয়েছে দুটি সমকালীন উপন্যাস নিশিকুমারী ও নিকুঞ্জ নিকেতন। মিশুক স্বভাব ও ভ্রমন পিপাসু মনের জন্য তিনি শুভাকাঙ্খি ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছে বেশ প্রশংসিত।