ফ্রয়েডের চশমায়
-কৃষ্ণনীল
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
ঘরের কোণে পড়ে আছে একজোড়া শূন্য চশমা—
তার কাঁচে ঘুম জমে আছে, পুরোনো নিঃশ্বাসের মতো।
আলোয় দাঁড়িয়ে থাকা ছায়াগুলো এখনো খোঁজে
অজানা কোনো দিকচিহ্ন,
যেন ঘড়ির কাঁটা ভুলে গেছে
কোন দিকেই বা সময় এগোয়।
একটি পেন্সিল, দুটি নদী, তিনটি অন্ধকার—
সব মিলেমিশে তৈরি করে এক অদ্ভুত শরীর,
যেখানে মেঘ জমে, ধোঁয়া আর বৃষ্টি
একই গোপন ভাষায় কথা বলে।
আমার মস্তিষ্ক এখন কাগজের নৌকা,
ভাসছে শৈশবের ভিজে দুপুরে,
যেখানে বালিশের নিচে লুকিয়ে থাকা বেহালাটা
রাত্রির বুক ফুঁড়ে বাজায় অদৃশ্য সুর।
একটি দ্বীপ তার মানচিত্র খুঁজছে,
মানুষের ভিতরের অবচেতন ছায়ারা
স্বপ্নের নরম ঘূর্ণিতে জড়িয়ে পড়ে।
আমার চিন্তাগুলো ঘুড়ির সুতোয় গিঁট বাঁধা—
একটু টানলেই আকাশ ছিঁড়ে যায়,
অথবা তারা মাটিতে পড়ে যায়
একদম নির্লিপ্ত, একদম বাস্তব।
তুমি কি শুনতে পাও সেই শব্দহীন কোলাহল?
নীরবতার পাখিরা মুখে করে আনে
ভাঙা সিদ্ধান্ত, অসমাপ্ত দৃষ্টি।
আলো নিভলে ছায়ারা সরে যায়,
কিন্তু প্রশ্নগুলো রয়ে যায়—
বালিশের তুলোর মতো,
ঘুমের ভিতর উড়ে বেড়ায়
ভুলে যাওয়া সমস্ত নামের ওপরে।
অজানা শহরের জানালাগুলো খোলা থাকে,
সেখানে আত্মার দেয়ালে টাঙানো
পুরোনো বিজ্ঞাপনের পোস্টার
আমাকে জিজ্ঞেস করে—
“তুমি এখনো তুমি আছ?”
আমার নাম এখন হাওয়ায় ঝুলছে,
যেমন ঝোড়ো বাতাসে উল্টে যাওয়া এক ছাতা—
ভেজা, একাকী, তবু অদ্ভুতভাবে টিকে থাকা।
ফিরে তাকাই ঘরের কোণে—
চশমাটা এখনো পড়ে আছে,
তার কাঁচে জমে থাকা ধুলোয়
দেখি আমারই মুখের ছায়া।
হয়তো আজ রাতেই কোনো হারানো স্মৃতি
আমার মাথার ভেতর মাছের গাছ হয়ে উঠবে,
অথবা আগামীকাল সকালে
আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
নিজেকেই চিনতে পারব না।
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
লেখক পরিচিতি-
ক্ষেত্র: কবিতা, গান, সুরচর্চা
শিক্ষা: এম.বি.এ (মার্কেটিং)
জন্ম: ১৯৭৪, কলকাতা
বর্তমান নিবাস: কলকাতা
পূর্বপুরুষের নিবাস: বরিশাল, বাংলাদেশ
পেশা: বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত
পদবী: Editor-in-Chief,
Professional Fortnightly English Newsletter (Global Corporate Updates- Sector Specific)

