কালপুরুষ

-নুপুর বিশ্বাস

♣♣♣♣♣♣♣

আমি মহাকাল,

আবার আমিই–

কালের আবর্ত থেকে

বেরিয়ে আসা কালপুরুষ ৷

কখনও আবার–

ঘোর তমসাচ্ছন্ন পৃথিবীর

যত অন্যায়–অবিচার,

যত পাপ,ব্যভিচার

আর মিথ্যার বুকে পদাঘাত হেনে

ন্যায়ের আলোক বর্তিকা হাতে

দন্ডায়মান দৃঢ়,কঠিন

এক জ্যোতির্ময় মহাপুরুষ ৷

আমি–

সত্যের পংক্তি রচনা করি

আমি মিথ্যাকে করি ধ্বংস,

আমি বিদ্যুৎ,

আমিই সেই মহাতেজ,

আমি —

ভস্মীভূত ছাইয়ের শেষ অঙ্গার

আমি আদি,আমিই শেষ ৷

আমি —

সত্যের ধারক,সুন্দরের বাহক,

আমি যুগে,যুগে হই অবতীর্ণ,

আমি ছিঁড়ে কুটে সব

অসঙ্গতি আর —

অসুন্দরকে করি চূর্ণ ৷

আমি—-

পাপে,পাপে ছাওয়া পৃথিবীর

পঙ্কিলতা বিদীর্ণ করে

স্বমহিমায় প্রস্ফুটিত

এক পদ্মকমল ৷

আমি জাতির —

ভবিষ্যৎ দ্রষ্টারূপে সদ্যজাত

মায়ের ক্রোড়ে ক্রন্দন রত

এক শিশু সরল ৷

আমি——

কখনও হই

কবির কলমের,

ভীষণ শক্তিধর

এক প্রতিবাদী ভাষা ৷

আবার কখনও

যোদ্ধার অসি’তে —

ন্যায়ের ঝলকানি,

অসুরের হই সর্বনাশা ৷

কখনও বা আমি

রাষ্ট্রনায়কের সুদৃঢ় নীতিতে

তুলি নতুনত্বের চমক,

কখনও হই

বিদ্রোহীর সোচ্চার কন্ঠে

মাঠে,ময়দানের

ঝাঁঝালো বক্তৃতা ,

অত্যাচারীর হই মুখোমুখি

করি সদাপটে সংঘর্ষ,

দেই-পাপাচারকে ধমক ৷

কখনও হই আমি

এক শান্ত,ধীরস্হির —

কোন সাধু বা দরবেশের

স্নিগ্ধ,স্মিত সৎবাক্য,

উড়াই চেতনার কেতন

ধ্বজা ধরি পুণ্যের ৷

কখনও আমি হই —

ঐ অতি সাধারণ মানুষটার

এক অনন্য অসাধারণ বিবেক,

ঘুচাই পথশিশুর দুঃখ,

জোগাই ক্ষুধার অন্ন

ঐ ভুক্ষা,অর্ধমৃত নিরন্নের ৷

আমি সেই কালপুরুষ,

মহাকালের অতল থেকে

পৃথিবীর টানে বার বার

ফিরে ফিরে আসা—

মহাজাতক আমি ৷

তোমাতেই আমার বাস ,

তোমার ভিতরেই বিরাজমান

এক মহাশক্তি আমি ৷

নিজের ভিতরের অশুভ সত্তাকে

প্রতিহত কর,

দমন কর ভিতরের —

পশুত্ব আর অসুরত্বকে,

প্রত্যেকেই হয়ে ওঠ এক একজন

সত্যিকারের কালপুরুষ ৷

সতেজে,সবেগে হও বিস্ফোরিত,

বাঁচাও ধরিত্রী,

বাঁচুক মনুষ্যত্ব,

সত্যের হোক জয়গান,

আসুক ফিরে শান্তি,

সব লোভ ,লালসা,কলুষতার

বিষবাষ্পের মায়াজাল ছিঁড়ে

জন্ম হোক এক আলোকিত,

নিষ্পাপ — নতুন পৃথিবী ৷

♣♣♣♣♣♣♣

কবি পরিচিতি-

সম্পূর্ণ নাম নুপুর বিশ্বাস‌। বাড়ি যশোর। পিতা “হাজারী লাল বিশ্বাস” এবং মাতা “সুধা রানী বিশ্বাস”এর সর্ব কনিষ্ঠা কন্যা আমি।ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাষক।আজন্মকাল সাহিত্যের প্রতি ভীষণভাবে অনুরক্ত।পার্থিব টানাপোড়েনে জীবনের অনেকটা সময় ইতিমধ্যেই অতিবাহিত।হঠাৎ করোনাকালীন অবকাশে কবিতার মাধ্যমে নিজেকে খুঁজে পাওয়া। “কবিতা এবং আমি”-এ সম্পর্কে ছন্দে ছন্দেই না হয় কিছু কথা বলা হোক- “আমি কবিতা লিখতে জানি না মনের কথা বলি, ঝলমলে মেকি পৃথিবী ছেড়ে সত্যের পথে চলি।”

2 thoughts on “কালপুরুষ -নুপুর বিশ্বাস

  1. করোণা ভাইরাসের মতই হঠাৎ আবির্ভাব, এ কবি প্রতিভার। ইংরেজিতে শিক্ষা ও পেশা নিয়ে বাংলায় এত দক্ষতা যা সত্যিই আবাক করেছে। অনেক শুভকামনা ও প্রানঢালা অভিন্দন রইলো কবির প্রতি।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*