লিখেছেন : অনন্যা পাল সেনগুপ্ত

 

ঠকানো বা ঠকে যাওয়া বা বিরহ এই শব্দ গুলির অর্থ কি? এই গুলোতো আপেক্ষিক শব্দ। কারোর কাছে ঠকার অর্থ জীবন টা শেষ আবার কারোর কাছে জেতার অর্থ জীবন শুরু। তোমার কাছে ঠকা বা জেতার কোন মূল্য ই কোনদিন আমার ছিল না, কিন্তু আমার কাছে এই শব্দগুলো খুব দামী শব্দ।। বিয়ের পর যেদিন আমাকে না বলে লুকিয়ে তোমার বাড়ি তে এসে রফা করে গেলে তোমার বাবা মা র সাথে, সেদিন থেকে ই আমার ঠকার পথ শুরু হলো, না জেনে ই ঠকে গেলাম আমি, তবুও মেনে নিয়ে বোকার মতো পথ চলতে শুরু করলাম। একবছর,দুবছর করতে করতে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম আরো কয়েকটি বছর। এর মধ্যে ফললো আমাদের ফসল, আমি ভাবলাম ভালোবাসার ফসল; কিন্তু এতো বোকা ঐগুলো যে জৈবিক ফসল তা বুঝতে পারলাম আবার ঠকার পর। প্রতি নিয়তই ঠকতাম তোমার কাছে, সংসারে র কাছে, তবুও কাউকেই আমার ঠকার কথা জানাই নি। মুখে খিলখিল কৃত্রিম হাসি আর বড়ো লাল টিপ দিয়ে ঢেকে রাখতাম নিজের ঠকে যাওয়া টাকে, এইভাবেই কেটে গেলো দীর্ঘ পঁচিশ টা বছর।। এরপর এলো আমার জেতার পালা, বুঝলাম নীরব চাউনি,নীরব ভালোবাসা। কিন্তু আবার ঠকার ভয়ে, সমাজের ভয়ে,তার সংসার ভাঙ্গার ভয়ে, সংসারে র দায়বদ্ধতা র কাছে থাকলাম নিশ্চুপ কাটলো এইভাবেই দুটি বছর। এই দুই বছরে নিজের সাথে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে বুঝলাম এই মানুষটি কে ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ তখন দিলাম ধরা। মনের যেসব চাওয়া পাওয়া এতো দিন রুদ্ধদ্বারে রেখেছি বন্ধ করে,সে মানুষ টি এসে রুদ্ধদ্বারের সেই কক্ষে দিলো নাড়া এতো বছরের বঞ্চনা, প্রতারণা র সব দ্বারের কপাট খুললো এবার, কিন্তু তার ও আছে সংসার,তার ও আছে দায়িত্ব কর্তব্য তার ই মাঝে এক সন্ধিক্ষণে আছি আমি। শুধু একবার যে আমায় ঠকালো এতো বছর তাকে শুধু জানাতে চাই___ তুমি ঠকালেও আমি ঠকিনি, আমার এতো বছরের ঠকে যাওয়ায় বিনিময়ে পেয়েছি সত্যি ভালোবাসা র পূর্ণ কলস, যে কলসের স্পর্শে ফিরে পেয়েছি আবার আমার আমিকে,পেয়েছি আবার আমার স্বাভাবিক জীবন,হয়েছি আমি শূন্য থেকে পূর্ণ। তবে সংসারে র দায়বদ্ধতা য় আর নতুন করে সামাজিক ঘর বসানো যাবে না, মনের ঘরেই থাকবে আনাগোনা, মনে র ঘরেই হবে নতুন বসত।তাই আর “অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর ” হবে না।।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*