
বাঙালি ও ঈশ্বরচন্দ্র
-আবুল হাসমত আলী
∞∞∞∞∞∞∞∞
বাঙালির প্রতীক তুমি মানবিকতাবাদী ,
বজ্র কঠিন চরিত্র তোমার তবু ভীষণ দরদী ।
অসুস্থ, পীড়িত, অসহায়দের তুমি দিয়েছো সেবা,
তোমার কাজে অধিক মর্যাদা পেয়েছে যারা বিধবা।
গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জনের ঘোর প্রতিবাদী তুমি ছিলে,
বাল্যবিবাহের মত কুপ্রথা তো তুমিই রুখে দিলে ।
গর্জে উঠেছিলে তুমি যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে,
বাঙালির সেদিন মেরুদন্ড ছিল, স্থান ছিল ঊর্ধ্বে।
আর রামমোহন উচ্ছেদ করলেন সহমরণ প্রথা,
বলতে কি তোমার ছিল অকুণ্ঠ সমর্থন সেথা।
বিধবা বিবাহের প্রচলন করা তোমার উজ্জ্বল কীর্তি,
শিক্ষাঙ্গনে, চৌমাথার মোরে তাই দেখি তোমার মূর্তি।
তুমি উজ্জ্বল ভূমিকা নিয়েছো নারী শিক্ষা প্রসারে,
তাই তোমার আলোচনা হয় রাতবিরেতে দিন দুপুরে।
লিখেছো তুমি বর্ণপরিচয়, বোধোদয়, শকুন্তলা,
লিখেছো ভ্রান্তি বিলাস, আর কথামালা।
সেসব গ্রন্থ অমূল্য বাংলা ও বাঙালির কাছে,
তাই বাঙালি আজও মাথা নত করে তোমার মূর্তির নিচে।
কিন্তু আজ বাঙালি হয়ে গেছে বড্ড দুর্বল,
দাপুটেদের ধমকানিতে তারা হচ্ছে বিহ্বল।
আজ বাঙালি ব্যর্থ অনেক কিছু রক্ষার্থে,
স্কুলগুলো সব ধুঁকছে, বরাদ্দ কমছে শিক্ষাখাতে।
বাংলা ভাষার দুর্দশা দেখি চারিদিকে রাশি রাশি,
বাংলা ভাসাভাষী ভারতীয় পাচ্ছে তকমা_ বিদেশী।
সেটাই কেবল নয়, তাদের উপর চলছে অবিচার,
বাংলা ভাষায় কথা বলে অনেকে লাভ করছে অত্যাচার ।
এসব অন্যায়কে রুখতে হবে মোদের জীবন দিয়ে,
প্রতিজ্ঞা মোদের এটাই মহামান্য ঈশ্বরের জন্মদিনে।
∞∞∞∞∞∞∞∞
কবি পরিচিতি:
আমি, আবুল হাসমত আলী, পিতা- সেখ আতর আলী, মাতা- ইন্নান্নেসা বিবি, ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলায় বাস করি। আমার গ্রামের নাম ‘এরুয়ার’ যেটা ভাতার থানার অন্তর্গত। আমি ১৯৭৪ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করি। আমি প্রকৃতি ভালোবাসি, ভালোবাসি পৃথিবীর মানুষকে ও জীবজগতকে। আমার কাছে ধর্ম মানে মানবিকতা। তাই মানুষের মর্যাদা হানি আমাকে সর্বদা পীড়া দেয়। পৃথিবীর সকল মানুষের সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণ জীবনের আমি কামনা করি।