মনই ভয়ের আধার

-আবুল হাসমত আলী

⇔⇔⇔⇔

মানবজীবনে ভয় বড় বিচিত্র এক ঘটনা,

এমন কোন ব্যক্তি নেই যিনি ভয় পান না।

ভয় হচ্ছে অভিব্যক্তি মূলক, জীববিজ্ঞানের সাথে জড়িত,

“ভয়ের মূল ব্যাপার টিকে থাকা”, ডঃ ম্যানসেলের দ্বারা উক্ত।

টিকে থাকার জন্য ভয়ের কারণ জানা জরুরী,

একথা বলেন, প্রখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী ডঃ মারগী।

মানুষ ভয় পেলে তার হৃদপিন্ডের গতি বাড়ে,

অনেক মানুষ তার মোকাবেলা করেন সাহসের সঙ্গে।

হঠাৎ ভয় পেয়ে অনেক মানুষ ভীষণ চমকে ওঠে,

আসলে পারে না তারা ভয়ের বিরুদ্ধে মনকে প্রস্তুত করতে।

আর এক ধরনের ভয় মানুষকে দেয় ঘাবড়ে,

এটা মেরুদন্ড বেয়ে শিরশির করে নেমে আসে।

মানুষ ভয় পায় নানাবিধ অদ্ভুত কারণে,

মাকড়সা দেখে অনেকেই আঁতকে উঠে শিহরনে।

অনেকে উচু পাহাড় পর্বত দেখে ভীষণ ভয় করে,

মনে ভাবে তারা, যদি পরে সেথা হতে পা হড়কে।

আমরা বেশিরভাগ মানুষ মৃত্যু ভয়ে ভীত,

কেউ সেরকম কিছু করতে পারেনা এর বিহিত।

রোগভোগ করা আর একটা মারাত্মক ভয়ের কারণ,

রোগ নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করাই অস্বস্তির কারণ।

ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকসান বা চাকরি হারানো,

এসব অতিরিক্ত চিন্তা করা মানে দুশ্চিন্তা বাড়ানো।

ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী পরকালে আছে পাপের শাস্তি,

অনেক ধর্মান্ধ ব্যক্তির মধ্যে তা জাগায় অস্বস্তি।

অনেকে ভয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য,

তাবিজ- কবজ নেয় অথবা পথ দেখে ভিন্ন।

মানুষের অতিরিক্ত ভয়, মানে হচ্ছে ভীতি রোগ,

ইংরেজিতে যাকে বলে ফোবিয়া, যা বারায় দুর্ভোগ।

অতিরিক্ত ভয় বা ফোবিয়া থেকে রক্ষা পেতে,

অবশ্যই মনস্তাত্ত্বিক ডাক্তারের কাছে হবে যেতে।

কিন্তু সেখানেও রয়েছে আতঙ্ক বা ফোবিয়া,

লজ্জায় ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে না পারা।

আর মানুষের ভূতের ভয়ের আছে কি শেষ?

ভূত বলে কিছু নেই, আছে মনে ভয়ের আবেশ।

এই পৃথিবীতে মানব মনই ভয়ের প্রকৃত আধার,

ভয়কে জয় করতে সবকিছু করতে হবে যুক্তি দিয়ে বিচার।

মানুষকে হতে হবে শিল্প- সাধনা ও ভালো কাজে ব্রতী,

তাহলে মানব মনে অতিরিক্ত ভয় হবে না সাথী।

ভয়কে জয় করে এভারেস্টে উঠেছিলেন এডমন্ড হিলারি,

আর এক দুঃসাহসী কল্পনা চাওলা ছিলেন মহাকাশচারী।

ভয়কে জয় করে অনেকে হয়েছেন ইতিহাস সৃষ্টিকারী,

আমরা ভীতুরা সর্বদা ভয়ের চিন্তা করি ও ভয়ে মরি।

⇔⇔⇔⇔

কবি পরিচিতি:

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার অন্তর্ভুক্ত ভাতার থানার এরুয়ার গ্রামে ১৯৭৪ সালে আমার জন্ম। আমার পিতা শেখ আতর আলী এবং মাতা ইন্নান্নেসা বিবি। আমার পিতা একজন ক্ষুদ্র কৃষিজীবী মানুষ। আমি একজন গৃহশিক্ষক হয়ে বর্তমানে জীবন যাপন করছি ও সেইসঙ্গে একটু-আধটু লেখালেখিও করতে ভালোবাসি। আমি সাহিত্য ভালোবাসি, কাব্য- কবিতা ভালোবাসি, প্রকৃতি ভালোবাসি ও ভালবাসি মানুষকে। আমি চাই সমস্ত রকম সংকীর্ণতা মুক্ত , শোষণমুক্ত ও কুসংস্কার মুক্ত একটা স্বচ্ছ সমাজ।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*