বসন্ত শেষের এক বিকেলে

-পপি প্রামানিক

♥♥♥♥♥♥♥

ওগো ঋতুরাজ বসন্ত! যাচ্ছো বুঝি?

হ্যাঁ! সময় ফুরালে যাবেই তো চলে।

পঁচিশ বছর আগে —-

বসন্ত শেষের এক বিকেলে তুমি আমায় ছেড়ে গেলে চলে।

তারপর!!!

হ্যাঁ, তারপর কত বসন্ত এলো গেলো,

কিন্তু তুমি আর ফিরে এলে না।

তবে আমি —–?

আমি আজও তোমার জন্য মনের ঘরে ফুলের বাসর সাজাই,

প্রেমের তাজমহল গড়ি,

ধ্যানমগ্ন হয়ে হৃদয় মন্দিরে তোমাকে প্রতিষ্ঠা করি,

ভালোবাসার কাব্য লিখি।

কিন্তু তুমি ফিরে আসোনি।

সহস্র বার অগ্নিদগ্ধ হয়েও আমি অনুভবে স্বপ্ন বুনি।

বেদনার নীলিমায় ভেসে যাই নোনা জলে,

তবুও এক অযাচিত সুখের আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনী।

হয়তো বসন্ত শেষের এক বিকেলে তুমি ফিরবে।

আমি ভেবেছিলাম —- “ফুল যদি পারে ভালোবাসা শেখাতে,

চাঁদ যদি পারে রাতকে জাগাতে, মেঘ যদি পারে বৃষ্টি ঝরাতে”।

ত–বে ?

তবে আমি কেন পারবো না তোমায় ভালবাসতে?

আমি তোমার তুমিতে বিলিন হয়েছি,

তাই তো মরেও বেঁচে আছি।

কিন্তু সব বেঁচে থাকাই তো বেঁচে নয়।

আমার প্রেম তো ছিল না চিলেকোঠার অন্ধকারে,

ছিল না তো পদ্মপাতার বিন্দু জলে।

তবে কেন??

বসন্তের পর বসন্ত পেরিয়ে যায় —-

তবু তুমি ফিরে আসো না?

তোমার স্পর্শের চিহ্ন শরীরে মেখে আজও প্রশ্নের উত্তর খুঁজি।

কারণ বসন্তের কোকিল আমার প্রাণে আর গান গায় না,

হৃদয় বাগে ফোটে না বসন্তের কোনো ফুল,

বসন্তের আবীর রাঙাতে পারে না আমার বিবর্ণ মনটাকে।

তোমার পছন্দের সেই আটপৌরে সাজে আজও আমি অপেক্ষায়।

আমার নিরব কান্নার ঢেউ দু’কূলে আছড়ে পরে,

আমি তোমাকে ভেবে বাকরুদ্ধ হয়ে যাই।

ওগো বসন্ত!!

আমাকে তুমি একা ফেলে, এবারও যাচ্ছো চলে?

হয়তো বসন্ত শেষের এক বিকেলে,

তুমি ঠিকই ফিরবে আমার গড়া তাজমহলে।

♥♥♥♥♥♥♥

কবি পরিচিতি-

পপি প্রামানিক, সহকারী শিক্ষক, বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,  কালুখালী, রাজবাড়ী, বাংলাদেশ।

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*