ক্রীতদাস

–স্বপন গায়েন

→→→→→→

চাঁদের ম্রিয়মান আলোয় শেষে জেগে উঠছে ভোর
পূর্ণিমার চাঁদ ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছে ভোরের আলোয়
সারারাত জ্যোৎস্না ধোয়া জলে স্নান করছে সবুজ বনানী
কজন মানুষ রাত জেগে জ্যোৎস্নার আলো উপভোগ করবে!
ক্ষয়ে যাওয়া সভ্যতার হাতে সঁপে দিয়েছি জীবনের দলিল
বঞ্চিত ক্ষুধার্ত মানুষের পাণ্ডুলিপি জমা আছে মহাজনের কাছে
ঋণ শোধ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি নেই এই সভ্য দেশেও
ক্রীতদাসের মত দাসক্ষত লিখে দিতে হয় মহাজনের জিম্মায়!
অন্ধকার ঘরের মেঝেতে শুয়ে পড়ে গরীব অসহায় মানুষ
ভাঙা চালের ফাঁক দিয়ে দেখা যায় চাঁদের মরমী আলো
তবুও ওরা টের পায় না ওদের মত্যু কবর কবেই খোলা আছে!
রাত ভোর হয়ে আসে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে
ক্রীতদাসের জীবন থেকে মুক্তির পথ কেউ জানে না
তবুও বেঁচে থাকতে হবে সভ্যতার উল্লাস দেখতে দেখতে …
ঠাণ্ডা ঘরে বসে মহাজন মিলিয়ে চলে দলিলের হিসাব
রক্ত উঠছে গলা দিয়ে তবুও কাজ করতেই হবে
দাসক্ষত যে লেখা হয়ে গেছে বহুযুগ আগে থেকেই!
→→→→→→

কবি পরিচিতি
কবি – স্বপন গায়েন, ঠিকানা – পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় মন্দিরবাজার থানার অন্তর্গত রঘুনাথপুর গ্রামে জন্ম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাবসাস্ত্রে অনার্স নিয়ে বাণিজ্যে স্নাতক। বাবা ছিলেন পোষ্ট মাস্টার। মা গৃহবধূ।
প্রথম লেখা বের হয় স্কুল ম্যাগাজিনে। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়। একটা ছোটো গল্প। বাবা প্রথম আমার হাতে তুলে দেন দু’জন স্বনামধন্য লেখকের দুটি রচনাবলী। শরৎ রচনাবলী ও নজরুল রচনাবলী। বলতে পারেন বাবার হাত ধরেই আমার সাহিত্যে হাতেখড়ি। বাড়িতে একটি বইয়ের ছোট্ট লাইব্রেরী আছে। সেখানে কে নেই? রবীন্দ্রনাথ, শঙ্খ, সুভাস, সুনীল, শক্তি, জয় প্রভৃতি বিখ্যাত সাহিত্যিকদের সংকলন আছে আমার কাছে। এমন কি শামসুর রহমান, হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন প্রভৃতি বাংলাদেশের বিখ্যাত সাহিত্যিকদের কিছু বই আমার আছে।
কলেজে পড়ার সময় থেকেই কবিতা লেখালেখি শুরু। কলকাতার একটি পত্রিকায় ‘প্রথম আলো’য় বেশ কিছু কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৮ সালে একটি পত্রিকায় (পূজা সংখ্যায়) একটি অনুগল্প প্রকাশিত হয়েছে।
“আলোর মিছিল, উৎসবে মাতি, টাট্টু ঘোড়া, কাব্যে আনন্দধারা, সাঁঝবাতি, চেতক, প্রয়াস, অনুস্বার পত্রিকা” প্রভৃতি পত্রিকায় আমার কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত মাসিক “ঝিলমিল” পত্রিকায় জানুয়ারী’২০ ও মার্চ’২০ সংখ্যায় দুটি ছড়া প্রকাশিত হয়েছে।
২০২০ সালে ১২টি বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি একক কাব্যগ্রন্থ “আধ খাওয়া চাঁদ” প্রকাশিত হয়েছে ( ২০২০ সাল )। পরমাণু কবিতার বই “শৈশব চুরি” প্রকাশিত হয়েছে ( ২০২১ সাল )। পেশা – বর্তমানে টাটা কালারস-এর C & FA তে কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত।

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*