মায়ের মাঝেই স্বর্গ
-পপি প্রামানিক
♦♦♦♦♦♦♦
হঠাৎ একদিন মনে সাধ জাগে স্বর্গ দেখার——
আমি সত্যিকারের স্বর্গ দেখতে চাই!
কিন্তু চাইলেই কি স্বর্গ খুঁজে পাবো আমি?
চলমান এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি পরতে পরতে স্বর্গ খুঁজতে শুরু করলাম।
খুঁজতে খুঁজতে পাহাড় থেকে সমুদ্র বাদ থাকলো না কিছুই।
কিন্তু স্বর্গের দেখা পেলাম না!
একলব্যের মতো ধ্যানমগ্ন হয়ে বসলাম স্বর্গ দর্শনের আরাধনায়।
তবুও ব্যর্থ হলাম আমি!
কিন্তু থেমে রইলো না আমার স্বর্গ দর্শনের সাধনা—-
খুঁজতে থাকলাম নিজের মনের মাঝেই কাঙ্খিত সেই স্বর্গ।
নিজের পরিবারের সাথে যাপিত সময়ের মাঝেও পাইনি সেই স্বর্গের সন্ধান!
হতাশাগ্রস্ত হয়ে স্রষ্টার দুয়ারে আঁচল পেতে ভিক্ষা চাইলাম একটু স্বর্গ দর্শনের।
স্বর্গ সুখ আমি চাই না!
আমি শুধু চাই একটু স্বর্গ দর্শন——–
স্বর্গ দর্শনের আকুল আবেদনে ব্যর্থ হয়ে যেদিন আমার নোনা জলের সমুদ্র উপচে পড়লো ———
ঠিক সেই দিনই নিজের কষ্ট লুকাতে ছুটে গেলাম মায়ের কাছে।
মায়ের কোলে মাথা গুঁজে মুখ লুকিয়ে যখন কাঁদছিলাম ——
হঠাৎ তখন অনুভব করি সেই কোলেই পাচ্ছি আমি স্বর্গীয় সুখের আবেশ!
পেয়ে গেলাম আমার কাঙ্খিত সেই স্বর্গ!!!
এক মুহূর্তেই কেটে গেলো আমার হৃদয় আকাশের কালো মেঘ।
কিন্তু হায়! হাতের পাশে স্বর্গ রেখে বৃথাই ঘুরেছি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড।
এই তো পরম সুখ! এই তো আমার স্বর্গ!
মাগো স্বর্গ বলে যদি কিছু থেকে থাকে সেটা তোমার মাঝেই।
সন্তানের আসল স্বর্গ মায়ের কোল, মায়ের স্নেহ, মায়ের ভালোবাসা, মায়ের পৃথিবী।
মায়ের মাঝেই প্রকৃত স্বর্গ!
♦♦♦♦♦♦♦
পরিচিতঃ
পপি প্রামানিক, সহকারি শিক্ষক, বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিতাঃ আশুতোষ প্রামানিক, মাতাঃ কানন বালা প্রামানিক
স্বামীঃ বিশ্বজিৎ সাহা, দুই কন্যাঃ সজ্জিতা সাহা এবং অর্জিতা সাহা, শখের কাজঃ আবৃত্তি বা গান শোনা, রান্না করা, ছবি তোলা, ভ্রমণ করা, অবসরে বই পড়া। বর্তমানে অন লাইন ভিত্তিক বিভিন্ন সাহিত্য পরিবারের সাথে যুক্ত থেকে সামান্য লেখালেখির চেষ্টা করা।