বাস্তবতা বুঝি এমনই হয়
-পপি প্রামানিক
♦♦♦♦♦♦♦♦♦
আমি খুব আবেগপ্রবণ এবং কল্পনাবিলাসী!
অল্প একটু আবেগেই উচ্ছ্বসিত হই, অনুভূতিগুলো অনুরণিত হয়।
মেঘের ডানায় ভর করে হাওয়ায় ভেসে চলি—–
অবাধ্য স্বপ্নেরা মনের কোণে ভীড় জমায়।
তবে আমার মনোভূমি বেশ উর্বর—–
তাই তো অতি সহজে তুমি কত স্বপ্ন বপন করে দিলে!
আর আমিও সেগুলো লালন করতে থাকলাম।
তোমার দেখানো সকল স্বপ্নে আমি একাত্মতা ঘোষণা করলাম!
হঠাৎ একদিন তুমিও আমার স্বপ্ন পূরণের সহযাত্রী হয়ে গেলে——-
শুরু হলো আমাদের সংসার নামক ময়দানের কর্মযজ্ঞ।
আমার সহস্র ব্যস্ততার মাঝেও তোমার জন্য সযতনে আগলে রাখতাম কিছু মুহূর্ত!
এই যেমন গোধূলি বেলায়, গরম কফির পেয়ালায়, মহুয়ার গভীর নেশায় বিচরণ করতে ইচ্ছে করে বপন করা সেই স্বপ্নের মনোভূমিতে——
কিন্তু এমন একটি মুহুর্ত আর উপভোগ করা হয় না আমার!
তুমি ব্যস্ততার মহা সমুদ্রে নিজেকে হারিয়ে ফেলো।
আমি নাগাল পাই না তোমার!
আবার যখন পৃথিবী ঘুমায় রাতের কোলে ——-
মায়াবী চাঁদ আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়, আকাশে শতসহস্র তারকারাজি জেগে ওঠে, জোনাকিরা জ্বালিয়ে দেয় ল্যাম্পপোস্টের বাতি, ডানা ঝাপটায় রাত জাগা পাখিরা——
এমন মোহনীয় মুহুর্তে আমিও হারিয়ে যাই প্রকৃতির রূপের জৌলুসে!
তখন সহযাত্রী হিসেবে তোমাকে একান্তে পেতে ইচ্ছে করে আমার ভূবণে!
কিন্তু ক্লান্তির অবসাদে চোখের পাতা অন্তরঙ্গ হলে তুমিও হারিয়ে যাও রাতের কোলে ——
কিন্তু এমন একটি মুহুর্ত উপভোগ করা হয় না আমার!
ইচ্ছে হয় হঠাৎ করে কোনো বৃষ্টির দিনে এক সাথে ভিজতে, ইচ্ছে হয় তোমার সাথে আনমনে সমুদ্র দেখতে, ইচ্ছে হয় ফসিল মাঠের আঁকাবাঁকা পথে এক সাথে হাঁটতে, এমনি আরও কত কি——-
কিন্তু এমন একটি মুহুর্তও উপভোগ করা হয় না আমার!
পূরণ হয় না স্বপ্ন দেখা একটি ইচ্ছেও!
তোমার ব্যস্ততার কাছে অবনত মস্তকে হার মানে আমার সাজানো সেই স্বপ্নগুলো।
আসলে বাস্তবতা বুঝি এমনই হয়!
যেখানে ঠাঁই পায় না ভালোবাসা, আবেগ, ইচ্ছে বা কোনো স্বপ্ন।
♦♦♦♦♦♦♦♦♦
কবি পরিচিতঃ পপি প্রামানিক, সহকারি শিক্ষক, পিতাঃ আশুতোষ প্রামানিক, মাতাঃ কানন বালা প্রামানিক স্বামীঃ বিশ্বজিৎ সাহা, আমি দুই রাজকন্যার জননী। প্রিয় শখঃ রান্না করা, গান শোনা, আবৃত্তি শোনা। আর বর্তমানে অবসর সময়ে অনলাইনে একটু লেখার চেষ্টা। আমার জীবনের এক সেরা বন্ধু যে নিরবে নিভৃতে আমাকে লেখার অনুপ্রেরণা যুগিয়ে চলছে। যার অনুপ্রেরণায় মনের কথাগুলো গুছিয়ে লিখতে চেষ্টা করি। আমি সবার আশীর্বাদ প্রার্থী।