সত্যের সন্ধানে

-রবীন্দ্রনাথ হালদার

≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈

জীবনের একসময় ছিলাম বাচ্চা,

সবাই বলতো বাচ্চাটাকে দেখতে খুবই আচ্ছা।

বলতো তারা ঠিক যেন দেবশিশু,

নাম ধরে ডাকলে বলতো বিশু।

আরও একটু বড় হওয়ার পরে বলতো খোকা,

দুর থেকে আমাকে দেখে অনেকেই মেয়ে ভেবে খেত কিন্তু ধোঁকা।

তারপর হলাম সকলের আদরের ছোটো ভাই,

আদর পেয়ে এর কোল থেকে ওর কোলে যাই।

একদিন পরিবর্তন হতে-হতে আমি হয়ে গেলাম দাদা।

আর তারপর!বাস্তব জীবনেও আসতে শুরু করলো নানারকম বাধা।

অতঃপর যৌবনে উপনীত হয়ে আমি,

সময়ের সাথে তাল মেলাতে না পেরে প্রেমিকার কাছ থেকে ঘাঢ়ে নিয়েছি বদনামী।

আবার সেই আমি,

হয়েছি তার স্বামী,

তবুও সেই আমি,

জানিনা তার কাছে আজও কেন হয়ে আছি আসামী।

তারপর জীবনের নিয়মে কবে যে হয়ে গেছি কাকা,

আর সবার চাহিদা তখন আমার কাছে চাই শুধু টাকা।

এভাবে চলতে-চলতে একদিন কালের নিয়মে কতকিছু হলাম বাবা,জ্যাঠা কিংবা দাদু।

অবশেষে জীবনযন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হয়েছি আমি সাধু।

তারপর যেদিন আমার দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে শ্বাস,

তখন তো আমি আর মানুষ নই সবার কাছে অবাঞ্ছিত একটা লাশ।

আগে যদি জানতাম হায়! জীবনটা ধাপে-ধাপে বদলায়!

তবে এত সাধন-পূজন করে কে আর ঈশ্বরের কাছে মানবজীবন চায়!

বরঞ্চ হতাম সাদা সুগন্ধি বেলি ফুল,

মনের আনন্দে বনবালিকারা আমাকে দিয়ে বাঁধতো তাদের মাথার কালো চুল,

কিম্বা বানাতো কানের দুল।

দলবেঁধে যেত যখন তারা মনে হতো বন ভরে ফুটে আছে স্বর্গের পারিজাত ফুল।

বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে এখন আর এসব কিছুই ভাবিনা আমি,

এখন মনে হয় মানবজীবন নয় পরমাত্মার সন্ধান পাওয়া আমার কাছে অধিকতর দামী।

≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈

কবি পরিচিতি-

নিমতলা বাজার,নদীয়া,পঃবঃ,ভারত।

 

 

 

 

Leave a comment.

Your email address will not be published. Required fields are marked*