স্মৃতিতে আমার মা
-বিপ্লব শামীম
≈≈≈≈≈≈≈≈≈
ও মা, মাগো
কি করে পারলে চলে যেতে!
ইহ জগতে আর হবেনা দেখা
খুঁজি তাই তোমার স্মৃতিতে!
ভাবলেই হুহু করে কাঁদি
একেবারেই নিরবে নিভৃতে,
খুব বেশি করে কাছে আস তুমি
যখন দাড়াই ইবাদতে!
কতো যে স্মৃতি ছড়িয়ে আছে
নানা বাড়ি থেকে দাদা বাড়ি,
কাজের ফাঁকে একাকিত্বে
সেই স্মৃতিতেই ঘুরি ফিরি!
সুখে দুখে অভাব অনটনে
সর্বাবস্থায় দেখেছি হাসিখুশি,
স্বাদ আহ্লাদকে জলাঞ্জলি দিয়ে
স্বামী সন্তানদেরকেই করতে খুশি!
ভোর বেলার সেই ভুনা খিচুড়ি
অসাধারণ তার স্বাদ,
আজো যেন লেগে আছে ঠোঁটে
আজো খুঁজি সেই প্রভাত!
কি যত্ন করেই না বানাতে তুমি
ধনিয়া পাতার আচার,
অতুলনীয় তার স্বাদ ও ঘ্রাণ
তাই মনে পড়ে বারবার!
শেষবারের মতো দিয়েছিলে বানিয়ে
মাংশ দিয়ে বানানো পিঠা,
কোরবানীর ঈদে সবাই মিলে
ধুমধাম করে তা বানাতা!
তোমার পায়ে কদমবুচি করে
যেতাম ঈদগাহের মাঠে,
পরম স্নেহে মাথায় হাত বুলিয়ে
আমাদের আদর জানাতে!
সবাই মিলে দল বেঁধে যখন
বেড়াতে যেতাম বাড়িতে,
আমাদের দেখে বাবা আর তুমি
খুশিতে আটখানা হয়ে যেতে!
আবার যদি কদমবুচি করে
যেতে পারতাম ঈদগাহে!
আবার যদি তোমার বুকে
একটুখানি পারতাম ঘুমাতে!
বেঁচে থাকতে বুঝতেই পারিনি
তোমার ভালবাসার সুনামি!
চলে গিয়ে বুঝিয়ে দিলে মা
তোমাদের অভাব কতখানি!
হে প্রজ্ঞাময়, হে রাজাধিরাজ
হে অন্তর্যামী, হে রাহমানির রাহিম,
আমার বাবা মাকে রহম করো
তোমার রহমত তো অসীম!
≈≈≈≈≈≈≈≈≈
কবি পরিচিতি :
আমি দেওয়ান শামীমুল ইসলাম। ডাক নাম দুইটি, দাদার বাড়ীতে আমি শামীম আর নানার বাড়ীতে আমি বিপ্লব। বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার অধীনস্থ বাসাইল উপজেলার তিরঞ্চ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম! জন্মসাল – ১৯৭১। বাবা – মরহুম মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম ছিলেন স্বনামধন্য একজন প্রধান শিক্ষক ও সমাজ সেবক। মা – মরহুমা রওশন আরা বেগম শিউলি। আইসড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, সরকারী সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি (গণিত)। পেশা – শিক্ষকতা। বর্তমানে সৌদিআরবে কর্মরত। মূলত শখের বসেই লেখালেখি। প্রকৃতির সান্নিধ্য ও এর বিশালতা আমাকে মুগ্ধ করে। ধন্যবাদ।